Translate

Sunday 25 June 2017

মুসলিমদের হালচাল / ড. মোহাম্মদ আমীন


মধ্যপ্রাচ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ১৮৫০ খ্রিষ্টাব্দে ব্রিটিশ ইন্ডিয়া অফিস প্রথম মধ্যপ্রাচ্য নামটি উল্লেখ করে। তবে মার্কিন মেরিন অফিসার  Alfred Thayer Mahan ১৯০২ খ্রিষ্টাব্দে আরব ও ইন্ডিয়ার সীমারেখা চিহ্নিত করার জন্য নামটি ব্যবহার করলে ব্যাপক প্রচার পায়। বাহরাইন, সাইপ্রাস, মিশর, ইরান, ইরাক, ইসরাইল, জর্ডান, কুয়েত, লেবানন, ওমান, প্যালেস্টাইন, কাতার, সৌদি আরব, সিরিয়া, তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইয়েমেন - এই সতেরটি রাষ্ট্র নিয়ে মধ্যপ্রাচ্য। মধ্যপ্রাচ্যের মোট আয়তন ৭২,০৭,৫৭৫ বর্গকিলোমিটার। তন্মধ্যে সিংহভাগই মরুভূমি এবং জনবসতির অযোগ্য। ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের হিসাবমতে মধ্যপ্রাচ্যের জনসংখ্যা ৩৭৫ মিলিয়ন এবং প্রতিবর্গকিলোমিটারে লোক সংখ্যা ৫২ জন। রাষ্ট্র ১৭টি হলেও ইসরাইল ছাড়া মধ্যপ্রাচ্যের সবকটি দেশের অধিবাসীবর্গের ধর্ম, ভাষা, বর্ণ ও সংষ্কৃতি অভিন্ন। তারপরও এরা একটি রাষ্ট্রে পরিণত হতে পারেনি। তাহলে তারা কীভাবে প্রভাবশালী হবে? 
মধ্যপ্রাচ্যের সতেরটি মুসলিম রাষ্ট্রের একটির সঙ্গে অন্যটির সামান্য সদ্ভাবও নেই। সবসময় এক মুসলিম রাষ্ট্র অন্য মুসলিম রাষ্ট্রের ক্ষতির চিন্তায় মশগুল থাকে এবং ক্ষতি করার জন্য অমুসলিম রাষ্ট্রগুলোর কাছে নিজেদের মর্যাদা বিলিয়ে দিতে কুণ্ঠিত হয় না। নিজেদের খনিজ সম্পদ দিয়ে নিজের ধর্মানুসারী ভাইয়ের রাষ্ট্রকে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য কোটি কোটি ডলারের অস্ত্র কেনে, যন্ত্র কেনে। মধ্যপ্রাচ্যের প্রায় পুরো নিরাপত্তা এখন মার্কিন বলয়ের নিয়ন্ত্রণে। মধ্যপ্রাচ্যের অমূল্য খনিজ সম্পদ  বিজাতিদের হাতে তুলে ডলারের বিনিময়ে; ডলার তো কাগজই, যা মেশিনে দিলে জলের মতে বের হয়ে আসে।
ভারতের আয়তন ৩২,৮৭,২৬৩ বর্গকিলোমিটার। ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের হিসাবমতে জনসংখ্যা ১৩১১ মিলিয়ন এবং  প্রতি বর্গকিলোমিটারে জনসংখ্যার ঘনত্ব ৩৯২.৬। ধর্ম, বর্ণ, ভাষা ও সংস্কৃতি নিয়ে জনগণের মধ্যে ব্যাপক ভিন্নতা, বৈচিত্র্য ও মতপার্থক্য সত্ত্বেও মধ্যপ্রাচ্যের ৩৪ গুণ অধিক জনসংখ্যার দেশ ভারত, স্বাধীনতার পর হতে একটিমাত্র রাষ্ট্র হিসেবে শাসিত হয়ে আসছে। প্রকৃত অর্থে একদিনের জন্যও সামরিক শাসন কায়েম করতে হয়নি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কথাও এ প্রসঙ্গে বিবেচনা করা যায়। নানা জাতি-ধর্মের ৫০ টি অ্ঙ্গরাজ্য নিয়ে গঠিত। ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে ব্রিটিশরাজ ভারতবর্ষ থেকে দূরীভূত হওয়ার সময় পূর্ববঙ্গ ও পশ্চিম পাকিস্তান নিয়ে পাকিস্তান নামের একটি রা্ষ্ট্র গঠন করে দিয়েছিল। এরপর পশ্চিম পাকিস্তানিরা কীভাবে পূর্ববঙ্গের জনগণকে শোষিত করেছিল, তা কমবেশি সবার জানা। বস্তুত ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা অর্জনের পূর্বে, একটা দিনের জন্যও পাকিস্তান, সামরিক শাসন ছাড়া প্রকৃত অর্থে শাসিত হয়নি। মুসলিমরা ঐক্য বোঝে না, আত্ম ভোগের জন্য নিজ স্বার্থ চিন্তায়  এত সংকীর্ণ হয়ে যায় যে, পুরো জাতিটাই সংকীর্ণতার  চোরাগলি পথে হারিয়ে যায়। নইলে ভারত ২৯ টি অঙ্গরাজ্য নিয়ে এতদিন এক থাকতে পারলে পাকিস্তান কেন দুটি দেশ নিয়ে একদিনের জন্যও  ভালোভাবে থাকতে পারল না!
মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থিত ইহুদি রাষ্ট্র ইসরাইলের আয়তন ২০,৭৭০ বর্গকিলোমিটার এবং জনসংখ্যা ৭.৭ মিলিয়ন। তন্মধ্যে ১.৪ মিলিয়ন মুসলিম এবং ইহুদি ৬.৩ মিলিয়ন। মধ্যপ্রাচ্যের মোট জনসংখ্যা থেকে ইসরাইলের জনসংখ্যা বাদ দিলে মধ্যপ্রাচ্যের জনসংখ্যা দাঁড়ায় ৩৬৭.৩ মিলিয়ন। ইসরাইল মূলত মুসলিম রাষ্ট্র পরিবেষ্ঠিত একটি খুদে ভূখণ্ড। তারপরও ৩৬৭.৩ মিলিয়ন জনগণ অধ্যুষিত ৭১,৮৬,৮০৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের মধ্যপ্রাচ্যকে মাত্র ৭.৭ মিলিয়ন অধ্যুষিত ২০,৭৭০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের ইসরাইল পুতুলের মতো ইচ্ছেমতো নাকানি-চুবানি খাওয়াচ্ছে। ইসরালের সঙ্গে সংঘটিত একটি যুদ্ধেও মুসলিমরা জয়ী হতে পারেনি; চরম অপমানের সঙ্গে পরাজয় মেনে নিতে বাধ্য হয়েছে। পৃথিবীতে মুসলিমের সংখ্যা ১৪০ কোটি কিন্তু ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের হিসবেমতে, ইহুদির সংখ্যা মাত্র ১ কোটি ৪৪ লাখ। সারা বিশ্বের ১৪০ কোটি মুসলিম ১ কোটি ৪৪ লাখ ইহুদির কাছে জ্ঞান-বিজ্ঞান, শৌর্যবীর্য, প্রভাব-প্রতিপত্তি, মর্যাদা প্রভৃতি বিবেচনায় কত তুচ্ছ, কত নগণ্য, কত দুর্বল তা মধ্যপ্রাচ্যসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের দিকে তাকালে বোঝা যায়। বিশ্ব বিবেচনায় .৪৪ কোটি ইহুদির কাছে ১৪০ কোটি মুসলিম ক্রীতদাসের মতো অসহায় এবং মধ্যপ্রাচ্য বিবেচনায় ৩৬৭.৩ কোটি মুসলমান . কোটি ইহুদির  কাছে রাঁধুনির বাটির তলায় পড়ে থাকা পুটি মাছের চেয়েও কাতর। তাহলে হিসাব করে দেখুন, ১জন ইহুদি সমান কতজন মুসলমান 
অনেকে আবার বলে বসবেন, আমেরিকা ইসরাইলকে সাহায্য করছে, তাই এমন হচ্ছে, আমাদের সাহায্য করুক, আমরাও পারব। তো মুসলিমকে কেন আমেরিকা সাহায্য করছে না।এর কারণ আছে। সাহায্য পাওয়ার যোগ্যতা যার আছে, তাকেই সবাই সাহায্য করে, সহযোগিতাকে যোগ্যতা দ্বারা অর্জন করতে হয় এবং যোগ্যতার মাধ্যমে নিজের কল্যাণের আওতয় নিয়ে আসতে হয়। যার যোগ্যতা আছে তাকে চাকরি দেওয়া হয়, অযোগ্য লোক হাজার বছর বেকার থাকলেও কেউ চাকরি দেয় না, ভিক্ষা দিতে পারে হয়তো। যা তাকে আর পরনির্ভরশীল করে তোলে। মুসলমানদেরও হয়েছে এমন অবস্থা। আমেরিকা, মুসলমানদের সহযোগিতা প্রদানের যোগ্য মনে করে না, মুসলমানদের সে যোগ্যতা নেই। আমেরিকা মুসলিমদের ভিক্ষা দেওয়ার যোগ্য মনে করে এবং তাই করে। এ ভিক্ষা দিয়েই সে সারা বিশ্বের মুসলিমকে পদানত করে রেখেছে।  
কেউ তো আর কাউকে অমনি অমনি সাহায্য করে না। রাষ্ট্রাচারে এটি উচিতও নয়। মুসলিমরা এখনও মধ্যযুগের চিন্তাচেতনায় আবদ্ধ; পরিবর্তনশীলতাকে প্রচণ্ড ঘৃণা করে, গ্রহণ-মানসিকতা নেই বললেই চলে। কিছু করতে বললে, মধ্যযুগের চেতনার সঙ্গে মেলাতে যায়। এত পশ্চাৎপদ গোষ্ঠীকে কে-ই বা সাহায্য করবে? তারা তো নিজেরােই নিজেদের সাহায্য করছে না বরং কামড়াকামড়ি করে নিজের অল্প যে শক্তি আছে সেটাও শেষ করে দিচ্ছে। অধিকন্তু মুসলিমদের সহযোগিতা না করেও, তাদের কাছ থেকে আরও বেশি সুবিধা ও গোলামি পাওয়া যাচ্ছে। তো আর অযথা সহযোগিতা কেন? যে জিনিস বিনামূলে পাওয়া যায়, সে জিনিসের জন্য কে বা অর্থ খরচ করতে যাবে! যারা নিজেদের অবস্থার জন্য অপরের সহযোগিতা না পাওয়াকে দায়ী করে, তাদের সহযোগিতা বঞ্চিত হওয়ার কারণ এর চেয়ে আর বেশি কী হতে পারে! মনে রাখতে হবে, "God helps those who help themselves".
২০১৬ খ্রিষ্টাব্দ ৯০৪ জন লোক বিভিন্ন বিষয়ে নোবেল পুরষ্কারে ভূষিত হয়েছেন তম্মধ্যে ২০০ জন ইহুদি যা মোট নোবেল পুরস্কার বিজয়ীর ২২. ভাগ।  অথচ ইহুদির সংখ্যা পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার . ভাগেরও কম। নোবেল পুরষ্কার বিজয়ী ইহুদির মধ্যে ৪০ ভাগ অর্থশাস্ত্রে, ২৮ ভাগ চিকিৎসা শাস্ত্রে, ২৬ ভাগ পদার্থ বিদ্যায়, ১৯ ভাগ রসায়ান শাস্ত্রে, ১৩ ভাগ সাহিত্যে এবং ভাগ শান্তিতে নোবেল পুরষ্কার লাভ করেন মুসলমানদের মধ্যে নোবেল পুরষ্কার বিজয়ীর সংখ্যা ১০। যা মোট নোবেল পুরষ্কার বিজয়রী মাত্র . ভাগ। অথচ সারা বিশ্বে মোট মুসলমানের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ২০ ভাগ। মুসলমানদের মধ্যে জন শান্তিতে, জন সাহিত্যে, ১জন পদার্থ বিদ্যায়, ১জন রসায়ন বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তিনজন মুসলিম এককভাবে নোবেল পুরষ্কার পেয়েছেন। তারা হলেন: সাহিত্যে নোবেল পুরষ্কার বিজয়ী নাগিব মাহফুজ ওরহান পামুক এবং রসায়ন বিজ্ঞানে নোবেল পুরষ্কার বিজয়ী মিশরীয়-মার্কিন বিজ্ঞানী আহমেদ জেবিল। অনেকে বলেন, নোবেল কমিটি ইচ্ছে করে, ইহুদিদের পুরস্কার দেয় এবং তারা কৌশলে পুরস্কার বাগিয়ে নেয়। প্রথম কথা হচ্ছে, পুরস্কার তো কেউ অনিচ্ছা করে দেয় না। তাছাড়া ওরা যদি কৌশলে বাগিয়ে নিতে পারে, তো আমরা পারব না কেন? 
একজন খ্যাতিমান ইসলামি চিন্তাবিদ বললেন, মুসলিমরা কখনও নোবেল পুরস্কার পাবে না। যারা মুসলিম বিদ্বেষী তাদের নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়। তাহলে কি যে, দশজন মুসলিম নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তারা মুসলিম বিদ্বেষী এবং বিধর্মী। তাহলে আমির বলতে হবে, একজন মুসলিমও নোবেল পুরস্কার পায়নি। কিন্তু আমি যতটুকু জানি, নোবেল পুরস্কার অর্জন করলে তারা খুশির চিৎকারে দুনিয়া তোলপাড় করে দেয়। ইহুদির সঙ্গে পর্যন্ত নোবেল পুরস্কার নিয়েছে। তখন তিনি বলেন, না; ওরা মুসলিম। তবে এটা ঠিক, অযোগ্যরা সবসময় নিজের অযোগ্যতা ঢাকার জন্য নানা অজুহাত তোলে। যা তাদের আরও অযোগ্য করে তোলে। আইএস নাকি ইসরাইলের সৃষ্টি, যেই সৃষ্টি করুক না কেন, তাদের কার্যকলাপের দায় মুসলিমদের বহন করতে হচ্ছে। এদের রোধ করতে না পারা কিংবা ওদের দলে যারা যোগ দিচ্ছে তারা তো আর ইহুদি নয়।
অ্যমনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এর হিসেবমতে, পৃথিবীর সবচেয়ে নৃশংস ও আমানবিক দেশসমূহের মধ্যে সৌদি আরব, ইরান, ইরাক প্রভৃতি অন্যতম। উন্নয়নশীল দেশগুলো হতে যেসব মানুষ মধ্যপ্রাচ্যে চাকরি করতে যায, তাদের উপর কী অমানবিক নির্যাতন হয়, তা ভুক্তভোগী মাত্রই জ্ঞাত। পৃথিবীতে এমন কোনো দেশ নেই, যেখানে মুসলিম আছে অথচ ধর্মীয় হানাহানি রক্তারক্তি নেই। পাকিস্তান-আফগানিস্তানের দিকে তাকালে বিষয়টি আরও পরিষ্কার হয়। আইএস নাম দিয়ে একদল মানুষ, বিশ্বে মুসলিমদের অবস্থাকে আরও অসহায় করে দিচ্ছে। বার্মার দিকে চোখ দিলে অনুধাবন করা যায়, মুসলিমদের অবস্থা কত করুণ। ইয়ামেনের যুদ্ধে অসহায় কোনো মুসলিমকে প্রতিবেশি কোনো মুসলিম দেশে আশ্রয় দেওয়া হয়নি; তাদের আশ্রয় নিতে হয়েছে বিধর্মীদের দেশে। জনসংখ্যা বিবেচনায় পৃথিবীর বৃহত্তম মুসলিম রাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়া কয়েক হাজার অসহায় মুসলিমকে নৌকা থেকে নামতেই দেয়নি। মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি মুসলিম রাষ্ট্র ইরাক, কুয়েত, লেবানন, মিশর, প্যালেস্টাইন, সাইপ্রাস ইয়ামেনকে ধ্বংস করে দিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের লোকেরাই। ইরান-কাতারসহ আরও কয়েকটি দেশ ধ্বংস তালিকায় আছে। হয়ত কেউ কেউ বলবেন, ষড়যন্ত্র!ষড়যন্ত্র রুখতে না পারলে ষড়যন্ত্র ওইদিকে ধাবিত হবেই।এটিই রাষ্ট্রাচার, এটি ক্ষমতাচার। রাষ্ট্র পরিচালনায় কোনো দয়া নেই। আওরঙ্গজেব রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার বাবাকে বন্দি করেছে, সহোদর তিন ভাইকে খুন করেছে। 
মুসলিমরা পাঁচশ বছরের অধিক ভারত শাসন করেছে কিন্তু শাসন ক্ষমতা হস্তচ্যুত হবার পর ভারতবর্ষে তাদের পুরো অস্তিত্বই বিলীন হয়ে যায়। কারণ তারা শাসনের নামে শোষণ করেছে, স্থায়িত্ব প্রাপ্তির জন্য যা করা আবশ্যক তার কিছুই করেনি, করতে পারেনি। ফলে, লর্ড ক্লাইভের নেতৃত্বে একদল ব্যবসায়ীর হাতে চরম লজ্জার সঙ্গে পুরো ভারতবর্ষ তুলে দিতে হয়েছে। আশ্চর্যের বিষয়, যেখানে মুসলিম শাসকদের শাসনকেন্দ্র ছিল, সেখানে পর্যন্ত বর্তমানে মুসলিম প্রভাব নেই। শুধু অনার্য-ভূমি হিসেবে পরিচিত অবহেলিত বঙ্গদেশে ছাড়া উপমহাদেশের আর কোনো রাষ্ট্রে মুসিলম প্রভাব নেই। এটি যেভাবে হোক, মুসলিম শাসক ও শাসনের দুর্বলতাই প্রমাণ করে। জানা যায়, বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার নবাব সিরাজদৌল্লা নাকি বাংলা জানতেন না। অথচ ইংরেজরা এসে প্রথমে বাংলা শেখার জন্য কলেজ খুলে দিয়েছিল।
একসময় মুসলিমর সারা বিশ্বকে শাসন করেছে। তখন তাদের মধ্যে ঐক্য ছিল। তৎকালীন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য জয় কিংবা প্রভাব প্রতিষ্ঠার জন্য যে সব যন্ত্র বা কৌশল আবশ্যক ছিল, তাতে সমৃদ্ধ, ঋদ্ধ ও  দক্ষ ছিল। এখন কেউ যদি মনে করে, যে, সপ্তম শতকের অস্ত্র দিয়ে বিশ্বকে পদানত করবে, তাহলে তারাই পদানত  হয়ে যাবে।