Translate

Monday 16 March 2015

কৃতাঞ্জলি কৃতজ্ঞতাজ্ঞাপন / Vuian Alauddin

কৃতাঞ্জলি কৃতজ্ঞতাজ্ঞাপন

Vuian Alauddin
এ লেখাটুকু কেবলই ধন্যবাদ জ্ঞাপনার্থে। যে পেজ থেকে প্রতিনিয়ত উপকৃত হই, তার প্রতি কৃতজ্ঞতা না জানানো এক ধরণের গোমরাহি বলে মনে হয়। যাচিত বা অযাচিতভাবে প্রতিদিন বিভিন্ন পেজের/গ্রুপের সদস্য বনে যাই। এদের অধিকাংশই অর্থহীন অন্তভুক্তি আর তার কার্যক্রমে মাঝে মাঝে যে বিবমিষা হয় না তা বলতে পারি না। কিন্তু, শুবাচ সবার থেকে আলাদা-ব্যতিক্রমী।
বাংলায় জিগ্যেস আছে বলেই এই একটি পেজ আমি প্রতিদিন অনুসরণ করি। বিশেষভাবেেএ পেজের কয়েকজনের নাম না বললেই অন্যায় হবে। তাঁরা হলেন- Mohammed Amin, Khurshed Ahmed ,Shahidul Haque, Bijit Kumar Bhattacharjee, মুস্তফা কামরুল আখতার, Naeema Sehely প্রমুখ। হয়তো আরো নমস্য আছেন যাদের বিষয়ে আমার জানা নেই। এদের কেউ বিশ্লেষক আবার কেউবা কেউ গবেষক হতে পারেন তবে সবার মাঝে একটা বিষয়ে এজমালি রয়েছে- বাংলা ভাষার প্রতি অকৃত্রিম শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। বাংলার ক্রমঅগ্রসরমাণ অধোগতি দেখে মনের গহীনে যে খেদ ক্রমান্বয়ে পুঞ্জিভূত হচ্ছিল এতদিনে তা মুক্তির একটা পথ অবারিত দেখে যারপরনাই আনন্দিত।
এমনি হতভাগ্য যে পেশাগত কারণে স্বদেশে থাকার সৌভাগ্য নেই। পরদেশে পেশাগত পরবাসী। অবস্থাগতিকে ইংরেজির পাশাপাশি পর্তুগিজ ও স্প্যানিশের মত বিদেশি ভাষাও শিখতে হয়েছে। এ সকল ভাষাজ্ঞানে পুলকিতবোধ হয়, গর্ববোধ হয় না। বাংলা ভাষায় অপারদর্শিতা আমার বিবেকবোধকে সর্বক্ষণ কুরে কুরে খাচ্ছে। তত্রাপি সান্ত্বনা এতটুকু যে, আপনাদের সঙ্গী হতে পেরেছি, সতীর্থ হতে পেরেছি।
সবাইকে তাই কৃতাঞ্জলি কৃতজ্ঞতাজ্ঞাপন করছি।

Wednesday 11 March 2015

রঙ্গরসে বাংলা বানান: একটি অনবদ্য গ্রন্থ/ হায়াৎ মামুদ

রঙ্গরসে বাংলা বানান: একটি অনবদ্য গ্রন্থ

হায়াৎ মামুদ

বাংলা আমাদের মাতৃভাষা ও রাষ্ট্রভাষা, একইসঙ্গে দুটোই। ১৯৫২ সালের ২১শে ও ২২শে ফেব্র“য়ারি রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে যাঁরা শহিদ হয়েছিলেন তাঁরাই কিন্তু তাঁদের অজান্তে
স্বাধীন  সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ রাষ্ট্রটির বীজ বপন করেছিলেন। আমাদেরই উদাহরণে এখন আন্তর্জাতিকভাবে বিশ্বমাতৃভাষা দিবস ঘোষণা করেছে জাতিসংঘ।
সবই অতি উত্তম। কিন্তু এ সবের অন্দরমহলে লুকোনো আরেকটা কথাও আছে, যা অন্যেরা জানে না। সেটি হল মাতৃভাষা ও রাষ্ট্রভাষার প্রতি আমাদের সাম্প্রতিক অবহেলা। এই দুর্লক্ষণ অনেকেরই নজর এড়ায় নি, এবং তাঁরাই এগিয়ে আসছেন এর প্রতিকারকল্পে কিছু একটা করার জন্যে।

বাক্প্রত্যঙ্গ সক্রিয় থাকলে সব মানুষই কথা বলে নিজের মনের ভাব প্রকাশ করে থাকে, তা যে-ভাষাতেই হোক-না কেন। অথচ ‘ভাষা’ বিষয়টি আদৌ সহজ কোনো ব্যাপার নয়। তাকে শিখতে হয় অনেক কষ্ট করে। বলা-কওয়া, লেখালেখি, ভাষণ দেওয়া-কত কিছুই না। সবই আয়াসনির্ভর ও আয়ত্তসাপেক্ষ। সে কারণেই নির্ভূল লেখার জন্যে সব ভাষাতেই কত অসংখ্য ধরনের বইপত্তর।
 নিজের মা ও মাতৃভাষা সমার্থক। এমন কথা অনেক আগে থেকেই বহু মনস্বী ব্যক্তি উচ্চারণ করে আসছেন। কথাটি খাঁটি সত্য, কিন্তু এই সত্যকে উপলব্ধি করার জন্য নিষ্ঠা আবেগ অনুভূতি ইত্যাদি বহুকিছুর প্রয়োজন, এবং সেইসঙ্গে দরকার নিরন্তর চর্চা- বলার ও লেখার।
‘রঙ্গরসে বাংলা বানান’ যে অন্তর্গত প্রেরণা থেকে ড. মোহাম্মদ আমীন লিখতে উদ্ধুদ্ধ হলেন তাঁর প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই। এ-বই মাতৃভাষাপ্রেমী সকল বাঙালির প্রয়োজন মেটাবে, তাতে আমার কোনো সন্দেহ নেই। বইটির বহুল প্রচার কামনা করি। হাওলাদার প্রকাশনীকেও ধন্যবাদ তাঁরা এই গুরুদায়িত্ব গ্রহণ করেছেন বলে।

Saturday 7 March 2015

চকরিয়ার ইতিহাস/ অনুসিন্থিয়া জাহান চৌধুরী

কক্সবাজার জেলার প্রবেশদ্বার হিসাবে খ্যাত ‘চকরিয়া’ বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী উপজেলা। আর্থ-সামাজিক কর্মকাণ্ড, জন-বৈচিত্র্য, প্রাকৃতিক শোভা প্রভৃতি বিবেচনায় এ রকম অনিন্দ্য উপজেলার সংখ্যা বাংলাদেশে খুব একটা বেশি নেই। তবু এ উপজেলার ইতিহাস রচিত হয়নি দীর্ঘ কয়েক হাজার বছরেও। ড. মোহাম্মদ আমীন চকরিয়ার উপজেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসাবে যোগদানের পর চকরিয়ার ইতিহাস লিখতে শুরু করেন। কঠোর পরিশ্রম ও মেধার সমন্বয় ঘটিয়ে তিনি রচনা করেন চকরিয়ার উপজেলার প্রথম ইতিহাস। কেউ স্বীকার করুন বা না-করুন, গ্রন্থটি রচনা করে ড. মোহাম্মদ আমীন ঐতিহ্যবাহী চকরিয়ার ইতিহাসে  ইতিহাস হয়ে রয়ে যাবেন আযুগ।

এটি শুধু ইতিহাস নয়, অর্থনীতি, সমাজ, রাজনীতি, নৃতত্ত্ব, ধর্ম, বিজ্ঞান, সাহিত্য, ভুগোল, জনমিতি প্রভৃতির তথ্যবহুল বিবরণে ঋদ্ধ একটি অনবদ্য গ্রন্থ। কী নেই এখানে? ইতিহাস কত প্রাণবন্ত হতে পারে, হতে পারে কত জীবন্ত এবং সাবলীল তা এ গ্রন্থটি না পড়লে অনুধাবন করা যাবে না।
ছয়ত্রিশ অধ্যায়ে পরিব্যাপ্ত এ ইতিহাসগ্রন্থে চকরিয়ার প্রাচীনত্ব, জনতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ; আয়তন, অবস্থান ও প্রশাসনিক কাঠামো; চকরিয়ার নামকরণ, ইউনিয়ন ও গ্রামসমূহের নামকরণ, চকরিয়ার প্রাগৈতিহাসিক যুগের ইতিাহাস, সামন্ত শাসন, চন্দ্র ও দেব বংশের আমলে চকরিয়া, ভেসালি রাজ্য ও মুসলিম অভিযান, চকরিয়ায় মুসলমানদের আগমন, সুলতানি আমল, আফগান আমল, চকরিয়ায় শাহ শুজা, আরাকানি আমল,  ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আমলে চকরিয়া, ব্রিটিশি আমল, মুক্তিযুদ্ধ ও চকরিয়া, চকরিয়ার পার্লামেন্ট প্রতিনিধি, ঐতিহ্যময় চকরিয়া, চকরিয়ার ঐতিহ্য ও কৃষ্টি, চকরিয়ার সুন্দরবন, ইসলামি ও আধুনিক শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া, সাংবাদিক, সংবাদপত্র ও প্রকাশনা, ধর্ম ও ধর্মীয় উৎসব, ধর্ম ও ধর্মীয় বিকাশ, রাখাইন ভাষা ও সাহিত্যাঙ্গন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ঐতিহাসিক ও দর্শনীয় স্থান, জাতীয় উন্নয়নে চকরিয়ার ভূমিকা, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, লবণ ও হিমায়িত মাছ, চকরিয়ার বাইরে চকরিয়া, একনজরে চকরিয়া প্রভৃতি বিবরণ চমৎকার ভাষায় তুলে ধরা হয়েছে।
চকরিয়াবাসী ছাড়াও দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে আগ্রহী সবার কাছে বইটি একটি অমূল্য সংগ্রহ হিসাবে বিবেচিত হবে।