চকরিয়ার ইতিহাস/ অনুসিন্থিয়া জাহান চৌধুরী
কক্সবাজার জেলার প্রবেশদ্বার হিসাবে খ্যাত ‘চকরিয়া’ বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী উপজেলা। আর্থ-সামাজিক কর্মকাণ্ড, জন-বৈচিত্র্য, প্রাকৃতিক শোভা প্রভৃতি বিবেচনায় এ রকম অনিন্দ্য উপজেলার সংখ্যা বাংলাদেশে খুব একটা বেশি নেই। তবু এ উপজেলার ইতিহাস রচিত হয়নি দীর্ঘ কয়েক হাজার বছরেও। ড. মোহাম্মদ আমীন চকরিয়ার উপজেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসাবে যোগদানের পর চকরিয়ার ইতিহাস লিখতে শুরু করেন। কঠোর পরিশ্রম ও মেধার সমন্বয় ঘটিয়ে তিনি রচনা করেন চকরিয়ার উপজেলার প্রথম ইতিহাস। কেউ স্বীকার করুন বা না-করুন, গ্রন্থটি রচনা করে ড. মোহাম্মদ আমীন ঐতিহ্যবাহী চকরিয়ার ইতিহাসে ইতিহাস হয়ে রয়ে যাবেন আযুগ।
এটি শুধু ইতিহাস নয়, অর্থনীতি, সমাজ, রাজনীতি, নৃতত্ত্ব, ধর্ম, বিজ্ঞান, সাহিত্য, ভুগোল, জনমিতি প্রভৃতির তথ্যবহুল বিবরণে ঋদ্ধ একটি অনবদ্য গ্রন্থ। কী নেই এখানে? ইতিহাস কত প্রাণবন্ত হতে পারে, হতে পারে কত জীবন্ত এবং সাবলীল তা এ গ্রন্থটি না পড়লে অনুধাবন করা যাবে না।
ছয়ত্রিশ অধ্যায়ে পরিব্যাপ্ত এ ইতিহাসগ্রন্থে চকরিয়ার প্রাচীনত্ব, জনতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ; আয়তন, অবস্থান ও প্রশাসনিক কাঠামো; চকরিয়ার নামকরণ, ইউনিয়ন ও গ্রামসমূহের নামকরণ, চকরিয়ার প্রাগৈতিহাসিক যুগের ইতিাহাস, সামন্ত শাসন, চন্দ্র ও দেব বংশের আমলে চকরিয়া, ভেসালি রাজ্য ও মুসলিম অভিযান, চকরিয়ায় মুসলমানদের আগমন, সুলতানি আমল, আফগান আমল, চকরিয়ায় শাহ শুজা, আরাকানি আমল, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আমলে চকরিয়া, ব্রিটিশি আমল, মুক্তিযুদ্ধ ও চকরিয়া, চকরিয়ার পার্লামেন্ট প্রতিনিধি, ঐতিহ্যময় চকরিয়া, চকরিয়ার ঐতিহ্য ও কৃষ্টি, চকরিয়ার সুন্দরবন, ইসলামি ও আধুনিক শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া, সাংবাদিক, সংবাদপত্র ও প্রকাশনা, ধর্ম ও ধর্মীয় উৎসব, ধর্ম ও ধর্মীয় বিকাশ, রাখাইন ভাষা ও সাহিত্যাঙ্গন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ঐতিহাসিক ও দর্শনীয় স্থান, জাতীয় উন্নয়নে চকরিয়ার ভূমিকা, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, লবণ ও হিমায়িত মাছ, চকরিয়ার বাইরে চকরিয়া, একনজরে চকরিয়া প্রভৃতি বিবরণ চমৎকার ভাষায় তুলে ধরা হয়েছে।
চকরিয়াবাসী ছাড়াও দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে আগ্রহী সবার কাছে বইটি একটি অমূল্য সংগ্রহ হিসাবে বিবেচিত হবে।
এটি একটি অনন্য আকর গ্রন্থ। চকরিয়ার শিক্ষিত প্রত্যেকের এ বইটি পড়া দরকার।
ReplyDelete