শুয়োর ও পিঠার গল্প / ড. মোহাম্মদ আমীন
শুয়োর ও পিঠার গল্প
ড. মোহাম্মদ আমীন
নয় বছর আগের কথা।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে মহালছড়ি বদলি হয়ে যোগদান করতে যাচ্ছি।
আমি গাড়ির সামনে। পেছনে অফিস সুপার চামাপ্রু। পাহাড়ি পথ, গাড়ি চলছে।
অনেক্ষণ সবাই চুপচাপ। নতুন অফিসার, বেশি কথা বলা শোভনীয় নয়।
হঠাৎ আমার দিকে তাকিয়ে মুখ খুলেন চামাপ্রু: শুয়োর-স্যার!
কী বললেন! আমি শুয়োর!! বিব্রতস্বরে জানতে চাই।
চামাপ্রু: আপনি স্যার ‘শুয়োর-স্যার’ হতে যাবেন কেন!
তাহলে ‘শুয়োর-স্যার‘ কে?
ড্রাইভার স্বপন রাস্তার ডানপাশ দেখিয়ে বললেন: ঐ যে, ‘সুয়োর-স্যার’।
আবারও ‘শুয়োর-স্যার’, মাথা পাগল করে দেবে বুঝি। রাস্তার ডানপাশে চোখ দেই।
একঝাঁক শুয়োর রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে।
বললাম: তোমরা কি শুয়োরকে ‘স্যার’ ডাক?
চামাপ্রু: জ্বী না স্যার।
তাহলে ‘শুয়োর-স্যার’ কে?
চামাপ্রু: রাস্তায় যেগুলো চরছিল সেগুলো ‘শুয়োর’, আপনি হচ্ছেন ‘স্যার’।
তার মানে তোমরা সমাস করেছ? শুয়োর ও স্যার = শুয়োর-স্যার।
স্বপন: জ্বী স্যার। আমি বাংলা দ্বিতীয়পত্রে সাতান্ন নম্বর পেয়েছিলাম।
চামাপ্রু: আমি স্যার বাষট্টি পেয়েছিলাম।
= = = = = = = = = = = = = = = = = = = =
পাকিস্তান আমলের কথা
রাঙ্গামাটির জেলাপ্রশাসক জনসভা করছিলেন।
এমন সময় এক পাহাড়ি ঢুকে সালাম দেন।
জেলাপ্রশাসক: কী চান?
আমি স্যার আপনাকে কিছু পিটা দিতে চাই। বহুদিনের ইচ্ছে আপনাকে পিটা দেয়ার।
হলভর্তি লোকের সামনে এতবড় অপমান!
জেলাপ্রশাসক লজ্জায় পাংশু। রাগে কাঁপতে শুরু করেন।
অবস্থা বেগতিক।
দ্রুত এগিয়ে আসেন বডি গার্ড সোলায়মান: স্যার পিটা নয়, পিঠা এনেছেন আপনার জন্য।
হেসে উঠেন জেলাপ্রশাসক: তাই বল সোলায়মান, পাহাড়ি পিঠার মজাই আলাদা।
No comments:
Post a Comment