Translate

Friday, 24 November 2017

বাঙালির বাংলা হাসি / প্রমিতা দাস লাবণী

 বাঙালির বাংলা হাসি ড. মোহাম্মদ আমীনের লেখা একটি ভিন্নধর্মী কৌতুকগ্রন্থ। বাংলা বানান, বাংলা
ব্যাকরণ, বাংলা উচ্চারণ ও বাংলা ভাষা নিয়ে লিখিত কৌতুকগ্রন্থের কৌতুকগুলি পড়লে শুধু হাসি নয়, হাসির সঙ্গে বাংলা ভাষা সম্পর্কে নতুন অভিজ্ঞান সৃষ্টি হবে। প্রায় দুইশ ছোটো ছোটো কৌতুক নিয়ে রচিত এই গ্রন্থটি বাংলা সাহিত্যে কৌতুকের জগতে অনবদ্য একটি সংযোজন হিসেবে অভিহিত হবে। বাংলা সাহিত্যে পুরো বাংলা নিয়ে এমন একক গ্রন্থ ইতোঃপূর্বে রচিত হয়নি। বইটির কৌতুকগুলি থেকে কয়েকটি কৌতুক আপনাদের জন্য তুলে ধরা হলো। এই কৌতুকগুলি পড়ে বইটি সম্পর্কে আপনাদের একটি ধারণা হবে। বইটির প্রকাশক পুথিনিলয়, পাবেন ২১০৮ খ্রিষ্টাব্দের অমর একুশে গ্রন্থমেলায় পুথিনিলয়ের স্টলে। প্রচ্ছদ করেছেন মামুন হোসাইন।
 কৌতুক নম্বর : ১২২
কবি আবদুস সাত্তার সাপ্তাহিক বিক্রম পত্রিকায় কাজ করতেন। ‘বিক্রম’-এর এক সংখ্যয় ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর একটা লেখা প্রকাশিত হলো। সদ্য-প্রকাশিত পত্রিকার একটা কপি নিয়ে কবি আবদুস সাত্তার খুশিতে ডগমগ হয়ে ড. শহীদুল্লাহ্র কাছে গেলেন।
ড. শহীদুল্লাহ্ পত্রিকার দিকে কিছুক্ষণ চোখ বুলিয়ে বললেন, সাত্তার, জায়নামাজে আমি
কখন পাদকর্ম করলাম?
আবদুস সাত্তার জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে শহীদুল্লাহ্র দিকে তাকিয়ে বিনীত কণ্ঠে বললেন, কিছুই তো বুঝতে পারলাম না স্যার।ড. শহীদুল্লাহ বললেন, আমি লিখেছিলাম, জায়নামাজে যখন পা
দিলাম ...। আর তোমরা ছাপিয়েছ, জায়নামাজে যখন পাদিলাম...। পাদকর্ম, তা-ও আবার জায়নামাজে। তোমরা কী ছাইপাশ ছাপও এসব?কবি আবদুস সাত্তার অপরাধীর কণ্ঠে বললেন, কম্পোজিটরের ভুলে ‘পা-এর সঙ্গে ‘দিলাম’ যুক্ত হয়ে গেছে।ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ বললেন, ‘পা’ এর সঙ্গে দিলাম যুক্ত হয়ে গিয়েছে ঠিক আছে, কিন্তু আমার উপর কেন এমন দোষটা চাপিয়ে দিলে?পরদিন পত্রিকা সংশোধন দিল, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ জায়নামাজে পাদেন নি। তিনি পাদিয়েছিলেন।এবার পা আর দিয়েছিলেন যুক্ত হয়ে গেল।ড. শহীদুল্লাহ্ লেখা দেখে হায়! হায়! করে ওঠলেন।

কৌতুক বানান কৌতুক


বিখ্যাত একটি পত্রিকার হেডলাইন : “পুলিশের গু খেয়ে ডাকাতের মৃত্যু”
শিরোনাম দেখে জনগণ হুমড়ি খেয়ে পড়ল। অবিশ্বাস্য, রীতিমতো শিহরন জাগানো
প্রমিতা দাস লাবণী
একটি সংবাদ। পাঠক এমন খবরই পড়তে চায়। তবে পুরো ঘটনা পড়ে সবাই হতাশ। পত্রিকা ভুল করেছে।
পরদিন পত্রিকা খবরটির সংশুদ্ধি দিল : “পুলিশের গুলি খেয়ে ডাকাতের মৃত্যু। গু খেয়ে কেউ মরেনি। আমরা দুঃখিত, গতকাল আমাদের পাছায় কিছু চুল ছিল।” আবার হুমড়ি খেয়ে পড়ে পাঠক। এ তো আরও মজার খবর! সংশুদ্ধিটি পড়ে পাঠক বুঝতে পারল আসল বিষয়। পত্রিকা আবারও ভুল করেছে।
পরদিন পত্রিকা পুনরায় সংশুদ্ধি দিল : “আসলে গতকাল আমাদের কারো পাছায় কোনো চুল ছিল না। ছাপায় কিছু ভুল ছিল।”

কাকতালীয় কৌতুক

ছাত্র : কাকতালীয় মানে কী স্যার?
শিক্ষক : কার্যকারণহীন দুটি ঘটনা আকস্মিকভাবে ঘটে যাওয়া। এটি একটি বাগধারা। কাক ও তাল থেকে এটির উৎপত্তি।
ছাত্র : কাক ও তাল কেন স্যার?
শিক্ষক : একটি কাক তাল গাছে বসল এবং বসামাত্র টুপ করে একটা তাল
ড. আমীনের কয়েকটি বইয়ের কভার।
মাটিতে পড়ে গেল। কাকটি না-বসলেও তালটি পড়ত, হয়তো তালটি না-পড়লেও কাকটি বসত। কাকের মতো ছোট একটা পাখির তাল গাছে বসার সঙ্গে তাল-পড়ার কোনও যোগসূত্র ছিল না। কিন্তু ঘটনাচক্রে তালের পতন ও কাকের বসা দুটো একসঙ্গে ঘটে গেল। এটাই কাকতালীয়। এবার তুমি কাকতালীয় ঘটনার একটা উদাহরণ দাও।
ছাত্র : আমার বাবার বিয়ে হল, সঙ্গে সঙ্গে আমার মায়ের বিয়েও! এমন কাকতালীয় আর দেখিনি স্যার, আপনি দেখেছেন?
শিক্ষক : দেখেছি।
ছাত্র : কোথায়?
শিক্ষক : তুমি জন্মগ্রহণ করার সঙ্গে সঙ্গে একজন পুরুষ বাবা এবং একজন নারী মা হয়ে গেল।
সূত্র : শব্দচয়নকৌতুকী, ড. মোহাম্মদ আমীন।

No comments:

Post a Comment