আজ স্বপ্ন দেখলাম, স্বপ্ন দেখলাম জনদাবির পরিপ্রেক্ষিতে
বাংলাদেশের প্রতিটি বিভাগ, মূখ্যমন্ত্রীশাসিত রাজ্যে
প্রতিটি জেলা, বিভাগে
প্রতিটি উপজেলা, স্বয়সম্পূর্ণ জেলায়
প্রতিটি ইউনিয়ন, এক একটি উপজেলায়
প্রতিটি ওয়ার্ড, চেয়ারম্যানের আওতাধীন ইউনিয়নে
প্রতিটি পাড়া, মেম্বারের অধীন ওয়ার্ডে এবং বিশ্বাস করুন,
প্রতিটি বাড়ি আয়তন অনুপাতে কমিউনিটি সেন্টার, শপিং মল, মাঠ, বিল বা পুকুরে পরিণত হয়েছে। আমাদের গ্রামের বাড়িটা একটু বড়ো। দেখলাম অবাক হয়ে, এটি ফুটবলের মাঠ হয়ে গেছে। এত বড়ো বাড়িতে থাকব কীভাবে?
হায় হায়!
স্বপ্নরাজ জানাল, আগামী ১৫ই জুলাই, ২০১৮, রোববার রাত ৯টায় মস্কোতে বিশ্বকাপের যে ফাইনাল অনুষ্ঠানের কথা ছিল তা ওখানে হবে না।
কোথায় হবে?
ফুটবল মাঠের মতো বিশাল হয়ে যাওয়া তোমাদের চট্টগ্রামের চন্দনাইশের বাড়িতে অনুষ্ঠিত হবে। লোকজন বিশ্বকাপ ফাইনাল দেখার জন্য দলে দলে চট্টগ্রাম যাওয়া শুরু করেছে। তাই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ১২০ কিলোমিটার যানজট। ফাইনালের আগে এই জট কমবে না।
জানতে চাইলাম, ফাইনাল খেলবে কোন দুটি দেশ?
স্বপ্নরাজ বলল, দুই নয়, তিন দেশ একসঙ্গে খেলবে। বাংলাদেশের সঙ্গে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা একত্রে ফাইনাল খেলবে।
কীভাবে জানলে?
স্বপ্নরাজ বলল, বিশ্বকাপের অনেক বাকি। তারপরও তোমাদের দেশের যুবশক্তি যেভাবে ব্রাআ-ব্রাআ করছে তাতে সারা ফুটবল বিশ্ব ভয় পেয়ে কাঁপছে। তাদের ধারণা বাংলাদেশি এসব লোকেরা পাগল হয়ে গেছে। হুজুগে, অথর্ব, নিষ্কর্মা এবং ঐতিহ্যহীন কিছু কিছু বাংলাদেশি যেভাবে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা নিয়ে পরপূজকের মতো মস্তক অবনত করে যাচ্ছে তাতে মনে তাদের কোনো দেশ নেই, ভাষা নেই, ঐতিহ্য নেই, স্বকীয়তা নেই, কর্ম নেই, বিবেচনা, বই নেই, সাহিত্য নেই, সংস্কৃতি নেই।
তাহলে তাদের কী আছে?
পরনির্ভরশীল মন। তাদের অর্থহীন চিৎকারে বিশ্বের তাবৎ ফুটবল খেলোয়াড়দের হাত-পা অবশ হয়ে পড়েছে ভয়ে। তাদের কানের পর্দা ফেটে গেছে বাংলাদেশিদের ব্রাআ-ব্রাআ পাগলা চিৎকারে। বাংলাদেশিরা ল্যাটিন আমেরিকার যে দুটি দেশ নিয়ে এমন লজ্জাকর লাফালাফিতে উন্মাদ, বলা যায় সেই দেশদুটির প্রায় কোনো লোকই বাংলাদেশের নাম পর্যন্ত জানে না। দু-একজন হয়তো দাপ্তরিক প্রয়োজনে জানতে পারে।
স্বপ্নরাজকে বললাম, বাংলাদেশের সঙ্গে যদি ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার ফুটবল খেলা হয়, তাহলে বাংলাদেশিরা কেন বাংলাদেশের কথা না বলে ব্রাআ-ব্রাআ করছে?
স্বপ্নরাজ বলল, এদের দেশপ্রেম নেই। এরা মাতৃভাষাটাও ভালো জানে না।
তাই বাংলাদেশে জন্ম নিয়েও এদের আচরণ দেশদ্রোহী রাজাকারদের মতো
ভয়ংকর। মাইকেল মধুসূদনের ভাষায় তারা ‘পরধনলোভে মত্ত’। বিবেচনাশূন্য এসব বাংলাদেশিরা নিজের দেশের মাটির উপর দণ্ডায়মান ঘরের ছাদে, ভবনের শৃঙ্গে, বৃক্ষের শিখরে বিদেশের পতাকা ওড়ায়। এরা পুরোই ঐতিহ্যহীন, ছি! তোমার লজ্জা করে না এদের দেখে?
এরা ফুটবল প্রেমিক, লজ্জা করবে কেন?
এদের বুকে দেশপ্রেমের চিহ্নমাত্র নেই। তাই নিজের বুকে বিদেশি পতাকা লাগিয়ে গর্বভরে ঘুরে বেড়ায়। নিজের গায়ে বিদেশি নামাঙ্কিত জামা জড়িয়ে ঐতিহ্য ও স্বকীয়হীনতাকে আরো উগ্র করে তোলে। পৃথিবীর আর কোনো দেশে এমন বিদেশ-বন্দনা দেখা যায় না। যারা নিজের দেশ, ঐতিহ্য আর স্বকীয়তাকে অবহেলা করে অন্য দেশের পূজো-বন্দনায় আনত হয় তাদের দিয়ে দেশের কোনো কল্যাণ হতে পারে না।
ঠিক বলেছে স্বপ্নরাজ।জাতীয় দিবসেও বাংলাদেশিরা এত জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে না, বিশ্বকাপে যত বিদেশে পতাকা উত্তোলন করে। এমন হীনম্মন্য জাতি পৃথিবীতে আর নেই।
তাদের বোধোদয় হোক। কামনা করি, যেভাবে তারা বিদেশ-প্রেম ও বিদেশ-বন্দনায় উন্মাদ সেভাবে তারা যেন স্বদেশ-বন্দনায় রত হয়।
তাতে তোমার লাভ?
আমার প্রশ্নের উত্তরে স্বপ্নরাজ বলল, পৃথিবীর সবচেয়ে নিকৃষ্ট সেই, যে নিজ দেশকে অবহেলা করে নিজের দেশে বসে পরদেশের বন্দনা করে। এরা আমার স্বপ্নকেও কুলষিত করে দিয়েছে। ছি বাঙালি ছি!
Monday, 21 May 2018
বিশ্বকাপ ফাইনাল / ড. মোহাম্মদ আমীন
Wednesday, 9 May 2018
জীবনান্দ / ড. মোহাম্মদ আমীন
১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দের ১৭ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি তথা বর্তমানে বাংলাদেশর বরিশাল শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পূর্বপুরুষেরা ছিলেন ঢাকা জেলার বিক্রমপুর পরগণার অধিবাসী। তাঁর পিতামহ সর্বানন্দ দাশগুপ্ত (১৮৩৮-৮৫) বিক্রমপুর থেকে বরিশালে চলে আসেন। সর্বানন্দ দাশগুপ্ত জন্মসূত্রে হিন্দু হলেও পরবর্তীকালে ব্রাহ্মধর্মে দীক্ষা নেন। জীবনানন্দের পিতা সত্যানন্দ দাশগুপ্ত সর্বানন্দের দ্বিতীয় পুত্র। সত্যানন্দ দাশগুপ্ত (১৮৬৩-১৯৪২) ছিলেন বরিশাল ব্রজমোহন স্কুলের শিক্ষক ও প্রাবন্ধিক। বরিশাল ব্রাহ্ম সমাজের সম্পাদক এবং ব্রাহ্মসমাজের মুখপত্র ব্রাহ্মবাদী পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা-সম্পাদক হিসেবেও তিনি খ্যাত ছিলেন।
জীবনানন্দের মাতা কুসুমকুমারী দাশ ছিলেন বিখ্যাত কবি। আদর্শ ছেলে তার একটি বিখ্যাত কবিতা। ওই কবিতায় তিনি লিখেছেন,
আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে
কথায় না বড় হয়ে কাজে বড়ো হবে।
জীবনানন্দ পিতামাতার জ্যেষ্ঠ সন্তান। তার ডাকনাম ছিল মিলু। ভাই অশোকানন্দ দাশ ১৯০৮ খ্রিষ্টাব্দে এবং বোন সুচরিতা দাশ ১৯১৫ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯০৮ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারি মাসে তাকে ব্রজমোহন স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি করানো হয়। ১৯১৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ব্রজমোহন বিদ্যালয় থেকে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন। দু’ বছর পর ব্রজমোহন কলেজ থেকে প্রথম বিভাগে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন। এরপর উচ্চশিক্ষার জন্য কলকাতার উদ্দেশ্যে বরিশাল ত্যাগ করেন।
জীবনানন্দ প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হন। ১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ইংরেজিতে অনার্সসহ বিএ পাস করেন। ওই বছর ব্রাহ্মবাদী পত্রিকার বৈশাখ সংখ্যায় তার প্রথম কবিতা ছাপা হয়। কবিতাটির নাম ছিল বর্ষ আবাহন। কবিতাটিতে কবির নাম ছাপা হয়নি, কেবল সম্মানসূচক শ্রী কথাটি লেখা ছিল। তবে ম্যাগাজিনটির বর্ষশেষের নির্ঘন্ট সূচিতে তার পূর্ণ নাম ছাপা হয়: শ্রী জীবনানন্দ দাশগুপ্ত, বিএ। ১৯২১ খ্রিষ্টাব্দে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় হতে দ্বিতীয় বিভাগ-সহ মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি কিছুকাল আইনশাস্ত্রেও অধ্যয়ন করেন। ১৯২২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি কলকাতা সিটি কলেজে অধ্যাপনা শুরু করেন।
দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ ১৯২৫ এর জুনে মৃত্যুবরণ করলে জীবনানন্দ তার স্মরণে ‘দেশবন্ধুর প্রয়াণে’ নামক একটি কবিতা রচনা করেন, যা বঙ্গবাণী পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। ১৯২৫ খ্রিষ্টাব্দে তার প্রথম প্রবন্ধ স্বর্গীয় কালীমোহন দাশের শ্রাদ্ধবাসরে প্রবন্ধটি ব্রাহ্মবাদী পত্রিকার পরপর তিনটি সংখ্যায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়। ১৯২৭ খ্রিষ্টাব্দে কবির প্রথম কাব্য ঝরা পালক প্রকাশিত হয়। সে সময় থেকেই তিনি দাশগুপ্তের বদলে কেবল দাশ লিখা শুরু করেন।
প্রথম কাব্য প্রকাশের কয়েক মাসের মধ্যে তিনি সিটি কলেজের চাকরিটি হারান। কলকাতায় তার কোনো কাজ ছিল না। তাই তিনি বাগেরহাটের প্রফুল্ল চন্দ্র কলেজে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। তবে তিন মাস পর পুনরায় কলকাতায় প্রত্যাবর্তন করেন। এ সময় জীবনধারণের জন্যে তিনি টিউশানি করতেন। ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বরে তিনি দিল্লির রামযশ কলেজে অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন।
১৯৩০ খ্রিষ্টাব্দের ৯ই মে তিনি লাবণ্য দেবীর সঙ্গে বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ে হয়েছিলো ঢাকায়, ব্রাহ্ম সমাজের রামমোহন লাইব্রেরিতে। বিয়ের পর আর দিল্লি ফিরে যাননি। এরপর প্রায় পাঁচ বছর কর্মহীন অবস্থায় ছিলেন। কিছু দিন ইনসিউরেন্স কোম্পানির এজেন্ট হিসাবে কাজ করেছেন।
১৯৩১ খ্রিষ্টাব্দে কবির প্রথম সন্তান মঞ্জুশ্রীর জন্ম হয়। এই সময় ক্যাম্পে কবিতাটি সুধীন্দ্রনাথ দত্ত সম্পাদিত ‘পরিচয়’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। কবিতাটির আপাত বিষয়বস্তু ছিল জোছনা রাতে হরিণ শিকার। অনেকেই এই কবিতাটি পাঠ করে তা অশ্লীল হিসেবে চিহ্নিত করেন। তিনি তাঁর বেকারত্ব, সংগ্রাম ও হতাশার এই সময়কালে বেশ কিছু ছোটগল্প ও উপন্যাস রচনা করেছিলেন। তবে তাঁর জীবদ্দশায় সেগুলো প্রকাশিত হয়নি। ১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি একগুচ্ছ কবিতা রচনা করেন। তাঁর মৃত্যুর পর কবিতাগুলো একত্র করে ১৯৫৭ খ্রিষ্টাব্দে 'রূপসী বাংলা' কাব্য প্রকাশিত হয়। ১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দে জীবনানন্দ ব্রজমোজন কলেজে ফিরে এসে ইংরেজি বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন।
দেশবিভাগের কিছুদিন আগে তিনি বিএম কলেজ থেকে ছুটি নিয়ে কলকাতায় চলে যান। এরপর আর পূর্ববঙ্গে ফিরে আসেননি। কলকাতায় তিনি দৈনিক স্বরাজপত্রিকার রোববারের সাহিত্য বিভাগের সম্পাদনা করেন কয়েক মাস। ১৯৪৮ খৃস্টাব্দে তিনি দুটি উপন্যাস লিখেছিলেন – মাল্যবান ও সুতীর্থ, তবে আগেরগুলোর মতো ও দুটিও প্রকাশ করেননি। ওই বছরের ডিসেম্বর মাসে তাঁর পঞ্চম কাব্য 'সাতটি তারার তিমির' প্রকাশিত হয়। একই মাসে কলকাতায় তার মাতা কুসুমকুমারী দাশের জীবনাবসান ঘটে। ততদিনে জীবনানন্দ কলকাতার সাহিত্যিক সমাজে পরিচিত হয়ে ওঠেন। মাঝে তিনি কিছুকাল খড়গপুর কলেজে অধ্যাপনা করেন। ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দে 'বনলতা সেন' সিগনেট প্রেস হতে পরিবর্ধিত আকারে প্রকাশিত হয়। বইটি পাঠকানুকূল্য লাভ করে এবং নিখিল বঙ্গ রবীন্দ্রসাহিত্য সম্মেলন ঘোষিত “রবীন্দ্র-স্মৃতি পুরষ্কার” লাভ করে। ১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দের মে মাসে প্রকাশিত হয় 'জীবনানন্দ দাশের শ্রেষ্ঠ কবিতা'। বইটি ১৯৫৫ খ্রিষ্টাব্দে ভারত সরকারের “সাহিত্য একাডেমি” পুরষ্কার লাভ করে।
চাকুরি ও জীবিকার অভাব তাকে আমৃত্যু নিগৃহ হতে হয়েছে। একটি চাকুরির জন্য হন্যে হয়ে বিভিন্ন জনের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন। ১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ই অক্টোবর কলকাতার বালিগঞ্জে এক ট্রাম দুর্ঘটনায় তিনি আহত হন। তাঁকে ভর্তি করা হয় শম্ভূনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে। ডাঃ ভূমেন্দ্র গুহ-সহ অনেক জীবনানন্দের সুচিকিৎসার জন প্রাণপণ চেষ্টা করেন। কবি-সাহিত্যিক সজনীকান্ত দাশের অনুরোধে পশ্চিম বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ বিধানচন্দ্র রায় কবিকে দেখতে এসেছিলেন। এ সময় কবির স্ত্রী লাবণ্য দাশকে কদাচিৎ কাছে দেখা গেছে। তখন তিনি টালিগঞ্জে সিনেমার কাজে ব্যস্ত ছিলেন। একদিন বাসায় এসে বাড়িতে এত লোক দেখে স্ত্রী বলেছিলেন, জীবনানন্দ এত জনপ্রিয় হলো কবে থেকে।
১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দের ২২শে অক্টোবর জীবননান্দ দাশ মারা যান। আসলে তিনি ট্রামের নিচে পড়ে আত্মহত্যার উদ্যোগ নিয়েছিলেন।গত এক শত বৎসরে কোলকাতায় ট্রাম দুর্ঘটনায় জীবনানন্দ দাশ ছাড়া আর কেউ মারা যায়নি।
জীবদ্দশায় তিনি তেমন খ্যাতি অর্জন করতে পারেনি। মৃত্যুর অব্যবহিত পর বাংলা ভাষায় আধুনিক কবিতায় শ্রেষ্ঠ কবিদের অন্যতম একজনে পরিণত হন। তিনি কবি হিসেবে সমধিক পরিচিত। তবে তিনি ঔপন্যাসিকও লিখেছেন। তার লেখা উপন্যাসের সংখ্যা ১৪ এবং গল্পের সংখ্যা শতাধিক।
উন্নয়নশীল ও অনুন্নত / ড. মোহাম্মদ আমীন
কোনো ভদ্রলোক অপ্রিয় কথা সোজাসুজি বলতে চান না। কিন্তু অপ্রিয় কথাটি যখন না বললেই নয়, তখন ব্যক্তিত্ব বা মানসম্মান কিছুটা হলেও রক্ষার জন্য একটু ঘুরিয়ে শোভনীয়ভাবে বলেন। ইংরেজিতে শব্দ চয়নের এই কৌশলকে Euphemism বলা হয়। বাংলায় এটি মঞ্জুভাষণ। ‘চাল নেই’ বলাটা লজ্জাকর মনে করেন অনেকে। তাই বলেন, চাল বাড়ন্ত। ভিক্ষকুকে ভিক্ষা দেওয়ার অপারগতা প্রকাশ করা হয়, ‘মাফ করো’ কথা দিয়ে। কিন্তু তাতে ভিক্ষুকের ঝুলিতে কিছু পড়ে না। না-পড়লেও ভিক্ষুক কিছুটা মানসিক তৃপ্তি পায়। সাহেব তার কাছে মাফ চেয়েছেন। সাহেবও খুশি হয়ে যান, শুধু কথা দ্বারা খুশি করা গেল।বেড়াতে গেলেন দার্শনিক। তিনি আবার নেতিবাচক কোনো কথা বলেন না। মিথ্যাও বলেন না। দুর্ভাগ্যবশত তার পাতে পড়ল একটা পচা ডিম। মুখে দিতে গিয়ে গন্ধ পেয়ে রেখে দিলেন বোন প্লেটে। গৃহস্বামী বললেন, ডিমটা কি ভালো না?দার্শনিক বললেন, খুব ভালো। তবে কিছুটা রাসায়নিক পরিবর্তন হয়েছে।কেউ নিজের দুর্বলতা ফলাও করে প্রচার করতে চায় না। যতটুকু সম্ভব ঢেকে রাখতে চায়। কিন্তু যখন প্রকাশ না করে উপায় থাকে না, তখন এমনভাবে প্রচার করে যেন, মানসম্মান কিছুটা হলেও বজায় থাকে। করিম সাহেবের ছেলে ছাত্রজীবনে সব পরীক্ষায় তৃতীয় বিভাগ পেয়েছে। অনেকে জিজ্ঞাসা করেন, আপনার ছেলে কোন বিভাগ পেয়েছে। ফাস্ট ডিভিশন পেয়েছ বলতে পারলে ভালো লাগত কিন্তু ডাহা মিথ্যা তো আর বলা যায় না। হাস্যকর হয়ে যাবে।তাই বলেন, আমার ছেলে জীবনে কখনো ফেল করেনি।সচিবালয়ে এখন কোনো কেরানি নেই। আগের সব প্রধান কেরানি এখন প্রাশাসনিক কর্মকর্তা। সব পিয়ন এক কলমের খোঁচায় ‘অফিস সহায়ক’ নামে বারিত। তহশিলদার পদ বিলুপ্ত, তারা ইউনিয়ন ভুমি সহকারী কমর্কতা। পদের নাম শোভনীয় হয়েছে কিন্তু কাজ একই।গলি আর অ্যাভিনিউ এবং মামলেট আর ডিমভাজির মধ্যে তফাৎ কেবল নামে।
অনুন্নত শব্দটি নেতিবাচক। ইংরেজিতে বলা হয় আন্ডার ডেভেলাপমেন্ট। অর্থাৎ উন্নয়নের নিচে। উন্নয়নশীল শব্দের অর্থ ডেভলাপিং অর্থাৎ উন্নয়নকে ধরার চেষ্টায় রত। ‘আন্ডার ডেভেলাপমেন্ট’ এবং ‘ ডেভেলাপিং’ দুটোর অবস্থানই উন্নয়নের নিচে। উন্নয়নের নিচে কেউ থাকতে চায় না। কিন্তু উন্নয়নের ওপরে ওঠাও সম্ভব হচ্ছে না। অবস্থানকে অপ্রকাশ্য রাখাও যাচ্ছে না। এ অবস্থায় নিজের সম্মান রক্ষার্থে কী বলা উচিত? আপনার অবস্থান কোথায়?উন্নয়নের নিচে বলাটা সমীচীন হবে না। মান-সম্মানের ব্যাপার।তাই বলব, উন্নয়নকে ধরার চেষ্টা করছি। মানে উন্নয়নশীল।ডিমভাজা ও মামলেট, তহশিলদার এবং ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা, পিয়ন আর অফিস সহায়ক, হেডক্লার্ক এবং প্রাশাসনিক কর্মকর্তা যেমন, অনুন্নত এবং উন্নয়নশীল কথাটাও ঠিক তেমন।
শিশ্ন আকৃতির ফল / ড. মোহাম্মদ আমীন
প্রকৃতির মতো বৈচিত্র্যময় আর কিছু নেই। বৈচিত্র্যময় বলে তার খেয়ালও বৈচিত্র্র্যময়।
এক ব্রাজিলিয়ান মালি বহু বছর আগে উত্তর ব্রাজিলের প্রত্যন্ত San Jose de Ribamar এলাকায় এক বিশেষ প্রজাতির প্যাশান ফ্রুট (passion fruit) এর সন্ধান পান। মনুষ্য শিশ্ন-আকৃতির ফ্রুটটি তাকে বিস্মিত করে দেয়। তার চেষ্টায় ফলটির কথা অনেকে জেনে যায়। এরপর এটি দক্ষিণ আমেরিকায় অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এ প্যাশান ফ্রুটটি এখন ব্রাজিল-সহ দক্ষিণ আফ্রিকার অত্যন্ত বিলাসবহুল হোটেলসমূহে ডেজার্ট থেকে শুরু করে তরকারি, সালাদ এবং ফল হিসেবে খাওয়া হয়। আকার অবিকল শিশ্নের মতো বলে ফলটি তার যোগ্যতার চেয়ে অনেক বেশি কদর পেয়ে থাকে। আসলে, ব্যতিক্রমে মানুষের আগ্রহ চিরকাল। কথিত হয়, ইভ এই ফলের রসই খেয়েছিলেন।
ব্রাজিল কৃষি বিভাগের গবেষক Marcelo Cavallari- এর ভাষায়, “এটি যেমন সুস্বাদু তেমনি স্বাস্থ্যকর। দেখলে প্রথমে মাথা ঘুরে যায়। দেশি-বিদেশি সবাই ফলটি আগ্রহ সহকারে দেখতে চায়। তবে এর চাষাবাদ পদ্ধতি অত্যন্ত জটিল এবং ফলনের হারও অত্যন্ত কম। তাই প্রচুর জনপ্রিয়তা এবং দাম সত্ত্বেও ফলটির ফলন খুব কম। ” কীভাবে ফ্রুটটি এমন আকৃতি পেল তা জানা যায়নি।কৃষিবিদদের ধারণা- প্রকৃতিগতভাবে ফলটি এমন আকার পেয়েছে।
৫৫ বছর বয়স্ক Brazilian মালি Maria Rodrigues de Aguiar Farias এই প্যাশান ফ্রুটের বাগান করে অল্প সময়ে বেশ ধনী হয়ে যান। তিনি, তার বাসায় এই ফলের বাগান সৃজন করেন। পারিয়াস, দর্শনার্থীদের অর্থের বিনিময়ে এই প্যাশান ফ্রুটের ছবি তোলার অনুমতি দিয়ে থাকেন। শুধু দেখার জন্য দুই রিয়াল, ছবি তোলার জন্য ১৫ রিয়াল এবং ভিডিও করার জন্য ২০ রিয়াল দিতে হয়। আমি কিন্তু এই ফলটি দেখিনি, ছবি দেখেছি। আবার ব্রাজিল গেলে দেখার চেষ্টা করব।আপনার কি কেউ দেখেছেন?
ম্যালামাইন নন্দিত বিষ / ড. মোহাম্মদ আমীন
খাদ্যগ্রহণের পাত্র হিসেবে যারা যত বেশি ম্যালেমাইনের তৈরী তৈজসপত্র ব্যবহার করেন, তাদের মেধা, সৃজনশীলতা, স্থৈর্য এবং দূরদর্শী চিন্তা তত বেশি ব্যহত হয়। এটি একটি জৈব যৌগ। যার গাঠনিক সংকেত C3H6N6। মেলামাইনের বিষাক্ত কণা খাদ্যের সঙ্গে মিশে শরীরের অন্যান্য অংশের মতো নিউরনেও আঘাত হানে। সবচেয়ে বেশি আঘাত হানে শিশুদের। এভাবে অতিরিক্ত ম্যালামাইনের যথেচ্ছ ব্যবহার উন্নয়নশীল দেশ-সমূহের শিশুদের মেধা ধীরে ধীরে হ্রাস করে দিচ্ছে। আমরা অসচেতন, বলতে গেলে প্রায় অজ্ঞ পিতামাতা নন্দিত হাস্যে আমাদের শিশুদের হাতে তুলে দিচ্ছি এই মারাত্মক বিষ।
অ্যামোনিয়াম থাইয়োসায়ানাইড থেকে উদ্ভুদ মেলাম ((melam) এবং আমিন (amine) শব্দ থেকে মেলামাইন শব্দের উদ্ভব। শব্দটির উৎস গ্রিক এবং এর অর্থ কালো। এই কালো বলতে বুঝানো হয়েছে মোহনীয় ভয়ঙ্কর। দেখতে সুন্দর হলেও এটি প্রাণীদেহের জন্য মারাত্মক কাল বা ক্ষতিকর।
খাদ্যবিজ্ঞানী ও রসায়নবিদদের অভিমান, ম্যালামাইন ফরমালিনের চেয়ে বেশি ক্ষতিকর। নানা রঙেঢঙে সজ্জিত মেলামাইনের পাত্র দেখে শুধু শিশু নয়, শিশুর প্রপিতামহ পর্যন্ত আকৃষ্ট হয়ে পড়ে। কত মজা করে ব্যবহার করা হয় ওই সজ্জিত পাত্রপাত্রী। কিছুদিনের মধ্যে রং আর আগের মতো থাকে না। পুরানো বউয়ের গোমড়া মুখের মতো বিমর্ষ হয়ে যায়। কোথায় যায় মেলামাইনের বিষাক্ত কণায় মেশানো ওই রং?
আপনার আমার শরীরে।
ইউরিয়া ও ফরমালডিহাইডের মিশ্রণে মেলামাইন রেজিন তৈরি হয়। দুটোই সাধারণভাবে প্রাণীর জন্য ক্ষতিকর। তবে, কেউ যদি নিজেকে উদ্ভিদ মনে করেন, সেটি অন্য কথা। এই প্রসঙ্গে ইউরিয়া অল্প আলোচনা আবশ্যক মনে করছি। তরল কার্বন-ডাই-অক্সাইড এবং আ্যমোনিয়ার মিশ্রনকে উচ্চচাপে এবং 130-150 ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করে ইউরিয়া উৎপাদন করা হয় ইউরিয়ার ৪৫%ই উদ্ভিদের প্রধান পুষ্টি উপাদান নাইট্রোজেন । তাই এটি সার হিসেবে ব্যবহৃত হয় ।কেউ যদি মনে করেন, ইউরিয়া, উদ্ভিদের মতো মানুষেরও পুষ্টি যোগায়, তাহলে তিনি প্রতিদিন মুড়ির মতো কয়েক মুঠো ইউরিয়া সার চিবোতে পারেন। অনেক দেশে, দুধ বা পুষ্টিকার খাদ্যসমূহে প্রোটিনের পরিমাণ বেশি দেখানোর জন্য ম্যালামাইন মেশানো হয়। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, অষ্টাদশ শতকের পর ম্যালামাইনের ব্যবহার বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে জ্ঞানী লোকের বিকাশও কমে গেছে। স্যার আইজ্যাক নিউটন-এর ( ১৬৪৩ – ১৭২৭) শতবর্ষ পর বিশ্ব পেয়েছে আলবার্ট আইনস্টাইন (১৮৭৯ - ১৯৫৫)। তারপর?
একটা বিষয় খেয়াল রাখবেন, তাপের অনুপস্থিতিতে মেলামাইন-রেজিন সাধারণত অপরিবর্তিত থাকে। তবে তাপের প্রভাবে, তা যতই সামান্য হোক না কেন, ম্যালামাইন পরিবর্তিত হতে শুরু করে, বিশ্লিষ্ট হতে থাকে তার শরীরে লুকিয়ে থাকা বিষাক্ত উপাদান-সমূহ। তাই ওভেনে মেলামাইন-পাত্র দেওয়া উচিত নয়। আমার অনুরোধ- একাজটি করবেন না। কেউ করলে তাকে বোঝানোর চেষ্টা করবেন। আমি দিই না কিন্তু বউ দিয়ে দেয়, নিষেধ করলে বলে, অত উপদেশ দিও না। যাই হোক, এটি আমাদের দাম্পত্য বিষয়, আসল কথা হচ্ছে ক্ষতি, মেধাশূন্য ভবিষ্যপ্রজন্ম। আপনি কী চান আপনার শিশুটা মেধাশূন্য হয়ে যাক? আর একটা বিষয়, মেলামাইনের তৈজস বহুল প্রচলিত হওয়ার পর পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে প্রতিবন্ধী শিশুর সংখ্যা বেড়ে গেছে। শুধু তাই নয়, মেলামাইন মানুষের মানসিক স্থৈর্যকেও স্পর্শকাতর করে তোলে।
তাপের সংস্পর্শে মেলামিন রেজিনের রাসায়নিক উপাদানগুলো আলাদা হয়ে পড়ে, যা বিষাক্ততার জন্য দায়ী। মেলামাইনের পাত্রে পরিবেশিত গরম খাবার খেলে কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। তা ছাড়া কিডনির কার্যক্ষমতা কমে যাওয়া এবং কিডনির ক্যান্সারও হতে পারে একই কারণে। তাইওয়ানে মেলামাইন নিয়ে একটি গবেষণা থেকে এই বিষয়ে নিশ্চিত তথ্য পেয়েছিলো বিশ্ববাসী। মেলামাইনের পাত্রে গরম খাবার পরিবেশন করলে উচ্চ তাপমাত্রায় মেলামাইনের কিয়দংশ খাবারে মিশে যায়। আমেরিকায় পরিচালিতক এক গবেষণায় বলা হয়েছে, শুধু ম্যালামাইনের তৈরী পাত্র নয়, ম্যালামাইনের তৈরী যে কোনো কিছুই ক্ষতিকর। এমনকি সেটি যদি টেবিল ক্লথও হয়।
দেশের ৭৭ ভাগ মানুষ সীসাজনিত দূষণের ফলে স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এরমধ্যে শিশু ও বয়স্করা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে আছে। শহরে এর পরিমাণ শতকরা ৯৭.৭ ভাগ এবং গ্রামে ৯৩.৭ ভাগ। এছাড়া দেশের ৮৮ ভাগ মানুষ কোন না কোনভাবে সীসাজনিত দূষণের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত রং থেকে এ সীসা ছড়াচ্ছে বলে গবেষকরা জানিয়েছেন। কিন্তু কেন? সিরামিক ও ম্যালামাইনের তৈজসপত্রের প্রচুর ব্যবহারই এর অন্যতম কারণ। ম্যালামাইনের তৈরী রঙ্গিন পাত্র থেকে সীসা আমাদের শরীরে বিষক্রিয়ার সৃষ্টি করে বিভিন্ন ধরনের রোগ তৈরি করছে।
সীসা খুবই বিষাক্ত পদার্থ। এটি সব সবার জন্য ক্ষতিকর। তবে শিশুদের জন্য মারাত্মক। সীসাযুক্ত রং সবচেয়ে মারাত্মক এবং আপনি জানেন বা না জানেন এটিই ব্যবহৃত হচ্ছে ম্যালামাইনে।ম্যালামাইনে ব্যবহৃত এই রং খুব সহজে খাদ্যকণার সাথে মিশে যায়। বিশ্বাস হয় না! তা না হলে ম্যালামাইনের পাত্র কেনার কয়েক মাস পর রঙচঙে রং কেন ওঠে যায়। ফলে শিশুরা বিষক্রিয়ার শিকার হয়। এতে মস্তিস্ক এবং স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি হয়, শরীরের স্বাভাবিক বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হয়, আচারণগত সমস্যা দেখা দেয়, শ্রবণে সমস্যা হয়, মাথাব্যথা সব সময় লেগে থাকে, পুরুষ ও মহিলাদের প্রজনন সমস্যা দেখা দেয়, উচ্চ রক্তচাপ, অতিরিক্ত মানসিক চাপ এবং স্নায়ুচাপ দেখা দেয়, স্মৃতি শক্তি কমে যায়, ঘুম কমে যায় এবং পেশী ও হাড়ের সংযোগ স্থানে ব্যথা হয়। পঙ্গুত্ব বা অকাল মৃত্যুর ঝুঁকিও বাড়ায়।
এজন্য অনেকে মনে করেন, ম্যালামাইন মানে মেলা মাইন।মাইন শব্দের অর্থ বারুদ দ্বারা স্থাপনাদি ভূমিসাৎ করিবার লক্ষ্যে এর নিচে খনন করা সুড়ঙ্গ। সুতরাং ম্যালামাইন আমাদের সমুদয় প্রতিভাকে, প্রাণশক্তি আর চাঞ্চল্যকে ধ্বংস করার একটি মারাত্মক মাইন।
মানুষ বাড়ছে, বাড়ছে বিজ্ঞানের আবিষ্কার- একই সঙ্গে বাড়ছে বিষ। খাদ্য, পাত্র, মাটি, বাতাস, শয়ন সবখানে বিষ। এত বিষ চারিদিকে, বিজ্ঞানের বিনাশ ছাড়া বিষমুক্ত হওয়ার কোনো সুযোগ আর নেই। তবে কিছুটা সাবধান থাকা যায়, তাহলে বিষ কিছুটা কম ঘেষতে পারবে। Something is better than nothing.
Subscribe to:
Posts (Atom)