চেঙ্গিস খান ও বাংলা ব্যাকরণ শহিদুল নতুন কর্মস্থলে যোগদান করেছেন, তারিখ ৮ ডিসেম্বর ২০১৩।
ছোট চাকুরি।
চাকুরি ছোট হলেও মনন ও চিন্তায় ঈশানচন্দ্র বন্দোপাধ্যায়।
সাহিত্য মহলে বেশ পরিচিত মুখ।
পদবি কী বুঝানোর জন্য আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদের উদারহণ টানা যায়।
পদে নয়, মস্তক ও প্রজ্ঞাতেও শহিদুল সাহিত্য বিশারদ। লিখেন ভালো,খুব ভালো।
ঈদানীং বড় চাকুরির চেয়ে ছোট চাকুরির মর্যাদা বেড়ে। বিশেষ করে প্রশাসন ক্যাডারের অবস্থা রীতিমত তথৈবচ।
সবাই পদোন্নতি চায় এবং অনেকে পেয়ে যায়। পদোন্নতি পাওয়ার পরও থেকে যেতে হয় পূর্বের স্থানে। পদ হয় কিন্তু হাঁটার শক্তি থাকে না।
কী উদ্ভট!
প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া মানে যদি পিএইচডি ডিগ্রির নিশ্চয়তা হয় তো প্রথম শ্রেণি আর ডক্টরেট ডিগ্রির পার্থক্য কী!
সহকারী সচিব হিসেবে চাকুরিতে যোগদান এখন সচিব হবার নিশ্চয়তা যেন।
সবাই বড় হয়ে গেলে প্রকৃতপক্ষে কেউ বড় থাকে না।
তার মানে কী?
সহকারী সচিব মানে উপ-সচিব, উপসচিব মানে যুগ্ম-সচিব এবং যুগ্মসচিব মানে অতিরিক্ত-সচিব - - -।
বলা হয়, সচিবালয়ে কেউ যদি চোখ বন্ধ করে একটা ঢিল ছুড়ে, সেটি কোন যুগ্ম-সচিব বা অতিরিক্ত-সচিবের মাথায় গিয়ে পড়বে।
মন্ত্রণালয়ে একজন যুগ্ম-সচিবের অধিনে একজন উপ-সচিব, একজন সিনিয়র সহকারী সচিব ও তার অধিনে একজন প্রাশাসনিক কর্মকর্তা।
তা হলে কে বড়?
হিসাবটা গোলেমেলে, তবে কঠিন নয়।
শহিদুলের কথায় চলে আসি।
শহিদুলের অসাধারণ প্রতিভা।
ছন্দে সত্যেন্দ্রনাথ, বর্ণনায় মোহিতলাল।
ছোট ছোট বাক্যে সাবলীল ছন্দ, দ্যোতনায় অনুপ্রাস বিবর্ধন; সত্যি অনবদ্য;
সত্যি মুগ্ধকর।
জনপ্রিয়তায় হয়ত হুমায়ুন আহমেদ নন, অবশ্য তিনি তার মতো অত সাধারণমানের লেখা লিখতেও পারবেন না। লজ্জায় কলম থেমে যাবে।
জনপ্রিয় হতে হলে নিম্নমানের লেখা লিখতে হয়, ছটিন্যাস।
সস্তা জনপ্রিয়তায় তার প্রবল অনীহা, সস্তার তিন অবস্থা।
শহিদুলের লেখার মান যেমন গবেষণাধর্মী তেমনি আকর্ষণীয়। তাই বোদ্ধামহলে বেশ মর্যাদা তার।
নতুন বসের নাম মো: ছরোয়ার হোসেন।
পদবি ইউএনও। তবে ইউনাইটেড নেশনস্ অর্গানাইজেশন নয়, আবার উপজেলা নাথিং অফিসারও নয়।
নাদুস-নুদুস চেহারা ছরোয়ারের। নন্দলাল নন্দলাল বদন;
দেখতে হ্যান্ডসাম, কোর্ট-প্যান্ট পড়লে তো বলিহারি!
শহিদুল বসের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়,
হাতে স্বরচিত তিনটা বই।
শহিদুল : স্যার, আমার লেখা তিনটা বই। আপনার সমীপে উপহার।
বই দেখে আর শহিদুলের কথা শুনে ছরোয়ারের চাঁদবদন কুঁচকে, চোখে বিতৃষ্ণা।
ছরোয়ার : আমি কবি-সাহিত্যিকদের একদম পছন্দ করি না।
শহিদুলের মুখ বসের কথায় ফ্যাকাশে হয় যাবার কথা, হয়নি; বরং করুণায় সিক্ত হয়ে উঠে।
এ কেমন বর্বর যিনি বই পছন্দ করেন না!
চেঙ্গিস খান নয় তো!
ছারোয়ার এমএসসি, এমএ, এমকম, এমএসএস, এমবিএ এবং এমএড।
কবি সাহিত্যিকদের পছন্দ না করলে এতগুলো ডিগ্রি কীভাবে নিলেন?
মনে পড়ে ডিগ্রি-বাণিজ্যের কথা, শতশত প্রতিষ্ঠান টাকায় ডিগ্রি দেয়।
বলতে ইচ্ছে করছিল শহিদুলের। বলা যাবে না। তিনি বস; এসব বলতে নেই।
এবার কর্কশ গলায় কড়কড় করে উঠেন ছরোয়ার : কি বলছি বুঝছেন?
সিক্ততা থেকে রিক্ততায় ফিরে আসে শহিদুল : স্যার!
ছরোয়ার : আমার এখানে কোন সাহিত্যচর্চা চলবে না।
এবার ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে শহিদুল। তবে মনে মনে : স্যার, তা আর বলতে হবে না। এখানে যোগদান করেই বুঝতে পেরেছি, আপনি এসব পছন্দ করেন না। মহান বিজয় দিবস উদ্যাপনের জন্য লেখা ছোট্ট একটা আমন্ত্রণপত্রে আটটি বানান ভুল। আপনার ডিগ্রি মানে তাপমাত্রা, জ্ঞানমাত্রা নয়।
মনের কথা মনে মিউট করে রাখেন শহিদুল। বসের সামনে মিউট থাকাই কিউট।
চাকর শব্দ হতে চাকুরি।
চাকুরি চলে গেলে খাবে কী? সাহিত্য-কর্মে তো পেট ভরে না! নইলে কখন এ চাকুরি ছেড়ে দিত!!
শহিদুল সাহেব! বসের কণ্ঠে সম্বিৎ ফিরে পান শহিদুল।
স্যার।
দেখুন, আমি আপনার বই রাখলাম বটে কিন্তু পড়ব না। বই পড়ার সময় আমার নেই। আমি শুধু কাজ পছন্দ করি।
শহিদুল মনে মনে হেসে উঠেন : যারা বই পড়েন না কিন্তু রাখেন তারা গর্দভ। তাদের বইগুলো গর্দভের পিটে বয়ে বেড়ান বোঝার মতো নিরন্তর কষ্ট। জনাব ছরোয়ার হয়ত গাধার মতো এ কাজটির কথাই বলেছেন। শহিদুল আবার মনে মনে আওড়ায়: গাধাও কাজ করে, বাবুই পাখিও। শ্রমিকও কাজ করে শিক্ষকও; সব কী অভিন্ন! তা হলে রিক্সাওয়ালা আর পাইলটের মর্যাদা সমান নয় কেন?
বইগুলো টেবিলের উপর রেখে বেরিয়ে আসেন শহিদুল।
মনটা খুব ফুরফুরে, কষ্টের মাঝেও আনন্দ।
তার চেয়েও অজ্ঞ লোক দেশে আছে।
ফাইল উল্টে শহিদুল বিমূঢ়।
চিঠির লাইনে লাইনে ভুল
অক্ষরে অক্ষরে কষ্ট
মাই গড!
এমন লোকের অধিনে কাজ করতে হবে তাকে।
শহিদুল এখন ছরোয়ারের চক্ষুশূল।
বসের অপছন্দের জিনিস বই তার পছন্দ, শত্রুর বন্ধু শত্রুই।
কাজ না থাকলে শহিদুল বই পড়েন, এটি তার আবাল্য অভ্যেস।
সেদিনও বই পড়ছিলেন। হঠাৎ কক্ষে ঢুকেন ছরোয়ার সাহেব।
কী পড়ছেন? বলেই অকস্মাৎ প্রবল জোরে হাত থেকে বইটা কেড়ে নেন জনাব ছরোয়ার।
শহিদুল : ব্যাকরণ পড়ছিলাম, বাংলা ব্যাকরণ স্যার।
নাম শুনে ঘৃণাভরে বইটা প্রচণ্ড জোরে মেঝে ছুড়ে দেন।
শহিদুল : স্যার, বাংলা ব্যাকরণ, আমার মাতৃভাষার নিয়মনীতি।
ছরোয়ার : গুষ্ঠি মারেন ওসব ফালতু ব্যাকরণ-ট্যাকরণ।
শহিদুল দৌঁড়ে গিয়ে বইটা তুলে নেন।
ছরোয়ার : আবারও সতর্ক করছি, আমার অফিসে এসব বই-টই পড়া চলবে না।
মনে মনে আঁতকে উঠেন শহিদুল, এ তো অফিসার নয়, রীতিমত অবিচার।
শহিদুল : অবসর সময়ে কী করবো স্যার
ছরোয়ার : ঘুমোবেন, ঘুম শক্তির উৎস।
বাহ্ কী আনন্দ, এখন শুধু ঘুম। শহিদুল আনন্দে একটা ছড়া কেটে ফেলেন।
কুম্ভকর্ণ শহিদুল,
বইপড়া বড় ভুল।
ছরোয়ারের আহবান
বই ছুড়ে চেঙ্গিস খান।
ইস্, ছরোয়ার সাহেব যদি জানতেন সাহিত্য বিশারদ, ঈশানচন্দ্র কিংবা শহিদুলের মতো
একজন সাহিত্যিক কারণিকের কাছে তার মতো সহস্র অফিসার পিঁপড়ে;
আজ মরলে কাল ফিনিশ।
[শুবাচ-সদস্য শাহিদুল হকের জীবনে ঘটে যাওয়া একটি সত্য ঘটনাবলম্বনে রচিত]
ছোট চাকুরি।
চাকুরি ছোট হলেও মনন ও চিন্তায় ঈশানচন্দ্র বন্দোপাধ্যায়।
সাহিত্য মহলে বেশ পরিচিত মুখ।
পদবি কী বুঝানোর জন্য আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদের উদারহণ টানা যায়।
পদে নয়, মস্তক ও প্রজ্ঞাতেও শহিদুল সাহিত্য বিশারদ। লিখেন ভালো,খুব ভালো।
ঈদানীং বড় চাকুরির চেয়ে ছোট চাকুরির মর্যাদা বেড়ে। বিশেষ করে প্রশাসন ক্যাডারের অবস্থা রীতিমত তথৈবচ।
সবাই পদোন্নতি চায় এবং অনেকে পেয়ে যায়। পদোন্নতি পাওয়ার পরও থেকে যেতে হয় পূর্বের স্থানে। পদ হয় কিন্তু হাঁটার শক্তি থাকে না।
কী উদ্ভট!
প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া মানে যদি পিএইচডি ডিগ্রির নিশ্চয়তা হয় তো প্রথম শ্রেণি আর ডক্টরেট ডিগ্রির পার্থক্য কী!
সহকারী সচিব হিসেবে চাকুরিতে যোগদান এখন সচিব হবার নিশ্চয়তা যেন।
সবাই বড় হয়ে গেলে প্রকৃতপক্ষে কেউ বড় থাকে না।
তার মানে কী?
সহকারী সচিব মানে উপ-সচিব, উপসচিব মানে যুগ্ম-সচিব এবং যুগ্মসচিব মানে অতিরিক্ত-সচিব - - -।
বলা হয়, সচিবালয়ে কেউ যদি চোখ বন্ধ করে একটা ঢিল ছুড়ে, সেটি কোন যুগ্ম-সচিব বা অতিরিক্ত-সচিবের মাথায় গিয়ে পড়বে।
মন্ত্রণালয়ে একজন যুগ্ম-সচিবের অধিনে একজন উপ-সচিব, একজন সিনিয়র সহকারী সচিব ও তার অধিনে একজন প্রাশাসনিক কর্মকর্তা।
তা হলে কে বড়?
হিসাবটা গোলেমেলে, তবে কঠিন নয়।
শহিদুলের কথায় চলে আসি।
শহিদুলের অসাধারণ প্রতিভা।
ছন্দে সত্যেন্দ্রনাথ, বর্ণনায় মোহিতলাল।
ছোট ছোট বাক্যে সাবলীল ছন্দ, দ্যোতনায় অনুপ্রাস বিবর্ধন; সত্যি অনবদ্য;
সত্যি মুগ্ধকর।
জনপ্রিয়তায় হয়ত হুমায়ুন আহমেদ নন, অবশ্য তিনি তার মতো অত সাধারণমানের লেখা লিখতেও পারবেন না। লজ্জায় কলম থেমে যাবে।
জনপ্রিয় হতে হলে নিম্নমানের লেখা লিখতে হয়, ছটিন্যাস।
সস্তা জনপ্রিয়তায় তার প্রবল অনীহা, সস্তার তিন অবস্থা।
শহিদুলের লেখার মান যেমন গবেষণাধর্মী তেমনি আকর্ষণীয়। তাই বোদ্ধামহলে বেশ মর্যাদা তার।
নতুন বসের নাম মো: ছরোয়ার হোসেন।
পদবি ইউএনও। তবে ইউনাইটেড নেশনস্ অর্গানাইজেশন নয়, আবার উপজেলা নাথিং অফিসারও নয়।
নাদুস-নুদুস চেহারা ছরোয়ারের। নন্দলাল নন্দলাল বদন;
দেখতে হ্যান্ডসাম, কোর্ট-প্যান্ট পড়লে তো বলিহারি!
শহিদুল বসের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়,
হাতে স্বরচিত তিনটা বই।
শহিদুল : স্যার, আমার লেখা তিনটা বই। আপনার সমীপে উপহার।
বই দেখে আর শহিদুলের কথা শুনে ছরোয়ারের চাঁদবদন কুঁচকে, চোখে বিতৃষ্ণা।
ছরোয়ার : আমি কবি-সাহিত্যিকদের একদম পছন্দ করি না।
শহিদুলের মুখ বসের কথায় ফ্যাকাশে হয় যাবার কথা, হয়নি; বরং করুণায় সিক্ত হয়ে উঠে।
এ কেমন বর্বর যিনি বই পছন্দ করেন না!
চেঙ্গিস খান নয় তো!
ছারোয়ার এমএসসি, এমএ, এমকম, এমএসএস, এমবিএ এবং এমএড।
কবি সাহিত্যিকদের পছন্দ না করলে এতগুলো ডিগ্রি কীভাবে নিলেন?
মনে পড়ে ডিগ্রি-বাণিজ্যের কথা, শতশত প্রতিষ্ঠান টাকায় ডিগ্রি দেয়।
বলতে ইচ্ছে করছিল শহিদুলের। বলা যাবে না। তিনি বস; এসব বলতে নেই।
এবার কর্কশ গলায় কড়কড় করে উঠেন ছরোয়ার : কি বলছি বুঝছেন?
সিক্ততা থেকে রিক্ততায় ফিরে আসে শহিদুল : স্যার!
ছরোয়ার : আমার এখানে কোন সাহিত্যচর্চা চলবে না।
এবার ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে শহিদুল। তবে মনে মনে : স্যার, তা আর বলতে হবে না। এখানে যোগদান করেই বুঝতে পেরেছি, আপনি এসব পছন্দ করেন না। মহান বিজয় দিবস উদ্যাপনের জন্য লেখা ছোট্ট একটা আমন্ত্রণপত্রে আটটি বানান ভুল। আপনার ডিগ্রি মানে তাপমাত্রা, জ্ঞানমাত্রা নয়।
মনের কথা মনে মিউট করে রাখেন শহিদুল। বসের সামনে মিউট থাকাই কিউট।
চাকর শব্দ হতে চাকুরি।
চাকুরি চলে গেলে খাবে কী? সাহিত্য-কর্মে তো পেট ভরে না! নইলে কখন এ চাকুরি ছেড়ে দিত!!
শহিদুল সাহেব! বসের কণ্ঠে সম্বিৎ ফিরে পান শহিদুল।
স্যার।
দেখুন, আমি আপনার বই রাখলাম বটে কিন্তু পড়ব না। বই পড়ার সময় আমার নেই। আমি শুধু কাজ পছন্দ করি।
শহিদুল মনে মনে হেসে উঠেন : যারা বই পড়েন না কিন্তু রাখেন তারা গর্দভ। তাদের বইগুলো গর্দভের পিটে বয়ে বেড়ান বোঝার মতো নিরন্তর কষ্ট। জনাব ছরোয়ার হয়ত গাধার মতো এ কাজটির কথাই বলেছেন। শহিদুল আবার মনে মনে আওড়ায়: গাধাও কাজ করে, বাবুই পাখিও। শ্রমিকও কাজ করে শিক্ষকও; সব কী অভিন্ন! তা হলে রিক্সাওয়ালা আর পাইলটের মর্যাদা সমান নয় কেন?
বইগুলো টেবিলের উপর রেখে বেরিয়ে আসেন শহিদুল।
মনটা খুব ফুরফুরে, কষ্টের মাঝেও আনন্দ।
তার চেয়েও অজ্ঞ লোক দেশে আছে।
ফাইল উল্টে শহিদুল বিমূঢ়।
চিঠির লাইনে লাইনে ভুল
অক্ষরে অক্ষরে কষ্ট
মাই গড!
এমন লোকের অধিনে কাজ করতে হবে তাকে।
শহিদুল এখন ছরোয়ারের চক্ষুশূল।
বসের অপছন্দের জিনিস বই তার পছন্দ, শত্রুর বন্ধু শত্রুই।
কাজ না থাকলে শহিদুল বই পড়েন, এটি তার আবাল্য অভ্যেস।
সেদিনও বই পড়ছিলেন। হঠাৎ কক্ষে ঢুকেন ছরোয়ার সাহেব।
কী পড়ছেন? বলেই অকস্মাৎ প্রবল জোরে হাত থেকে বইটা কেড়ে নেন জনাব ছরোয়ার।
শহিদুল : ব্যাকরণ পড়ছিলাম, বাংলা ব্যাকরণ স্যার।
নাম শুনে ঘৃণাভরে বইটা প্রচণ্ড জোরে মেঝে ছুড়ে দেন।
শহিদুল : স্যার, বাংলা ব্যাকরণ, আমার মাতৃভাষার নিয়মনীতি।
ছরোয়ার : গুষ্ঠি মারেন ওসব ফালতু ব্যাকরণ-ট্যাকরণ।
শহিদুল দৌঁড়ে গিয়ে বইটা তুলে নেন।
ছরোয়ার : আবারও সতর্ক করছি, আমার অফিসে এসব বই-টই পড়া চলবে না।
মনে মনে আঁতকে উঠেন শহিদুল, এ তো অফিসার নয়, রীতিমত অবিচার।
শহিদুল : অবসর সময়ে কী করবো স্যার
ছরোয়ার : ঘুমোবেন, ঘুম শক্তির উৎস।
বাহ্ কী আনন্দ, এখন শুধু ঘুম। শহিদুল আনন্দে একটা ছড়া কেটে ফেলেন।
কুম্ভকর্ণ শহিদুল,
বইপড়া বড় ভুল।
ছরোয়ারের আহবান
বই ছুড়ে চেঙ্গিস খান।
ইস্, ছরোয়ার সাহেব যদি জানতেন সাহিত্য বিশারদ, ঈশানচন্দ্র কিংবা শহিদুলের মতো
একজন সাহিত্যিক কারণিকের কাছে তার মতো সহস্র অফিসার পিঁপড়ে;
আজ মরলে কাল ফিনিশ।
[শুবাচ-সদস্য শাহিদুল হকের জীবনে ঘটে যাওয়া একটি সত্য ঘটনাবলম্বনে রচিত]
No comments:
Post a Comment