Translate

Thursday, 16 July 2015

ভূত-অঙ্কের জিরো থিউরি: কল্পকাহিনির নতুন ধারা / হায়াৎ মামুদ

ড. মোহাম্মদ আমীনের ভূত-অ্যাকশন ও সায়েন্স ফিকশন গ্রন্থ ‘ ভূত-অঙ্কের জিরো থিউরি’ গ্রন্থে হায়াৎ মামুদের মন্তব্য ও  আলোচনা।
কল্পকাহিনি কল্পনার মতো মধুর, স্বপ্নের মতো চমৎকার। তাই কল্পকাহিনি কম-বেশি সবাইকে আকর্ষণ করে। আমি নিজেও একসময় কল্পকাহিনির ভক্ত ছিলাম। দেশ-বিদেশের অনেক কল্পকাহিনি পড়েছি এবং অভিভূত হয়ে অনেক কাহিনি অনুবাদও করেছি। তবে কল্প-বৈচিত্র্যের বহুমুখী অনুধ্যানের কারণে ড. মোহাম্মদ আমীনের লেখা ‘ভূত-অঙ্কের জিরো থিউরি’ বইটি কল্পকাহিনির ইতিহাসে একটি ব্যতিক্রমী উপস্থাপনা হিসাবে বিবেচিত হবে।

বইটিতে ভূতসমাজের ভৌতিক অদ্ভুত ও উদ্ভট কর্মপরিক্রমার সঙ্গে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনির প্রত্যাশিত অনেক বিষয়কে নিপুণ বিস্ময়ে তুলে ধরা হয়েছে। তাই এটি শুধু
ভৈৗতিক কাহিনি নয়, বরং ভৌতিকতার সঙ্গে অবিচ্ছেদ্য আবেশে জড়িয়ে থাকা বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনিও বটে।  শধু ভূত নয়, ভূতের সঙ্গে আছে জিন-পরি, দৈত্য-দানব, রাক্ষস-খোক্ষস এবং যন্ত্র ও মানুষ। অধিকন্তু গ্রন্থটিতে দেশপ্রেম, শিক্ষা, সামাজিক মূল্যবোধ, পরিবেশ-দূষণ, রাজনীতি, মানবীয় প্রেম, ব্রহ্মা--রহস্য, বৈশ্বিক-প্রতিযোগিতা, বিজ্ঞান, জীবনবোধ, কুসংস্কার, ধর্মীয়-গোঁড়ামি, আধুনিক সভ্যতার সুফল-কুফল, সময়, অতীত-বর্তমান-ভবিষ্যৎ, জড়বস্তুর সঙ্গে জীবের সম্পর্ক, পুনর্জন্ম, পার্থিব জগতের সঙ্গে অপার্থিব জগতের সেতবন্ধন প্রভৃতিসহ মানুষ ও বিশ্বব্রহ্মা-ের প্রাত্যহিক ক্রিয়াকলাপের বিবিধ বিষয় বাস্তবতার আলোকে কল্পনার নিশানে লোমহর্ষক বিবরণে তুলে ধরা হয়েছে। এসব বিবেচনায় আমি মনে করি এটি কথাসাহিত্যে একটি নতুন সংযোজন।

গ্রন্থটির নায়ক ম্যানপি বাংলাদেশের এক তরুণ বিজ্ঞানী। সে উন্নয়নশীল বিশ্বের প্রতিভূ। ম্যানপি তার অপরিমেয় মেধাশক্তি ও বিচক্ষণতা দিয়ে অতীত, বর্তমান আর ভবিষ্যৎকে একই সময়ে এনে তিন কালের মানুষের সমন্বয়ে জ্ঞানের মহাসমুদ্রকে জয় করে নিতে সক্ষম হয়েছে। তার আবিষ্কার মানুষকে দিয়েছে আলোর চেয়ে অধিক গতিসম্পন্ন যান। জন্মের পূর্বে ভূতের নিকট হতে এবং যারা জন্মগ্রহণ করেনি তাদের কাছ থেকে ভবিষ্যজ্ঞানের তথ্য নিয়ে ম্যানপি বিশ্ববহ্মা-কে মানুষের হাতের মুঠোয় নিয়ে এসেছে। ফলে ইউরোপ-আমেরিকাসহ সমগ্রবিশ্ব উন্নয়নশীল বিশ্বের আনুগত্য স্বীকার করে নিতে বাধ্য হয়েছে।

বইটি পড়লে রোমাঞ্চ আর আকর্ষণ দুটোই একসঙ্গে পাঠকের মনকে  ঘিরে ধরবে। ‘ভূত-ভূমিকা, মরতে হবে’ শিরোনামে লেখকের উপক্রমণিকা পড়লেও শিউরে উঠতে হয়। এমন উপক্রমনিকা আমি আর কোনো বইতে দেখিনি।

বইটি অনবদ্য। আমার বিশ্বাস এটি কল্পকাহিনির ইতিহাসে একটি নতুন ধারার সূচনা করবে। আমি বইটির বহুল প্রচার কামনা করি।

No comments:

Post a Comment