Translate

Saturday 4 October 2014

বিশ্বের প্রথম মহিলা শাসক / ড. মোহাম্মদ আমীন

বিশ্বের প্রথম মহিলা শাসক

এ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যমতে প্রাচীন মিশরের হ্যাটসেপসুট (Hatchepsut) বিশ্বের প্রথম মহিলা শাসক। হ্যাচহেপসুট শব্দের অর্থ সর্বোত্তম মহা-মহীয়ান রমণী। তদকালে সারা বিশ্বে তার মত প্রজ্ঞাময় কোন শাসক ছিলেন না। তিনি ছিলেন বিজ্ঞানময় মন, বিচক্ষণ দৃষ্টিভঙ্গী ও উদার মননশীলতার অধিকারী। বিশ্বখ্যাত ইজিপটোলজিস্ট জেম হেনরি ব্রিয়াস্টেডের (James Henry Breasted) মতে , হ্যাচহেপসুটই বিশ্বের প্রথম মহিলা শাসক। হ্যাচহ্যাপসুট খ্রিস্টপূর্ব ১৪৭৯- ১৪৫৮ পর্যন্ত ২১ বছর মিশর সাম্রাজ্যের সম্রাজ্ঞী (ফারাও) ছিলেন। তার পূর্বে বিশ্বে কোন মহিলা শাসক ছিলেন, এমনটি জানা যায়নি। তিনি ছিলেন প্রাচীন মিশরের পঞ্চম ফারাও। তাকে আলোকিত মিশর সাম্রাজ্যের মহান ফারাও বলা হয়ে থাকে। কারণ তিনি প্রাচীন ধর্মীয় গোঁড়ামি, অবৈজ্ঞানিক তত্ত্ব, মনগড়া বিশ্বাস, অলীক দাবি ইত্যাদির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে বিশ্বকে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় সমৃদ্ধ করার প্রয়াস শুরু করেছিলেন। নারী শাসক হওয়া সত্ত্বেও সে প্রায় অন্ধকার যুগে তার আলোকবর্তিকা বিশ্বের জ্ঞান-বিজ্ঞান ও সভ্যতার বিকাশে অনিবার্য মাইল ফলক হিসেবে বিবেচিত।

হ্যাটসেপসুট ১৫০৮ খ্রিস্টপূর্বাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন প্রথম থুটমোজ ও তার প্রথম স্ত্রী আহমেজ এর কন্যা। তার স্বামী দ্বিতীয় থুটমোজ ছিলেন প্রথম থুটমোজ ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী মুটনেপেরেট এর সন্তান। হ্যাচহেপসুটই বিশ্বে প্রথম নারী অধিকার সম্পর্কে প্রায়োগিক ধারণার জন্ম দেন। তিনিই বিশ্বে প্রথম নারীর মর্যাদাময় জীবনের দাবি প্রতিষ্ঠা করে এবং নারীও যে পুরুষের মত মানুষ সে সম্পর্কে পূর্ণ ধারণা সৃষ্টি করেন। তার শাসনকালে কুসংস্কার ও কল্পিত বিশ্বাসের বিরুদ্ধে আলোকিত মানুষের প্রথম প্রতিবাদের শুভ সূচনা ঘটে। তার শাসনামলে বিশ্বে প্রথম ভবনবিদ্যা ও স্থাপত্যকলার সূচনা ঘটে। তার সময় জ্ঞান-বিজ্ঞান ও মুক্তচিন্তার ব্যাপক প্রসার ঘটে।

খ্রিস্টপূর্ব ১৪৫৮ এর ১৬ জানুয়ারি তিনি মৃত্যুবরন করেন। মমি পরীক্ষা করে জানা যায় তিনি বোন-ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরন করেন। মহারাজকীয় সমাধিস্থল এস্পিওজ আর্টমিডজ এর দায়ার এল বাহরির টেম্পল অব কার্নাকে তাকে সমাধিস্থ করা হয়। এখনও সেখানে তার স্মৃতিসৌধ মহাগৌরবে দাঁড়িয়ে।

No comments:

Post a Comment