মাকে দেব না বউকে / ড. মোহাম্মদ আমীন

অক্সফোর্ডে MS এর বিষয় ছিল Impact of marriage on Person and Family. শিক্ষার্থী ৪৯ জন। প্রথম ক্লাশের ঘটনা। শিক্ষক প্রত্যেকের হাতে একটা কাগজ ধরিয়ে দিলেন। লেখা ছিল : আপনার কাছে একটি একটি বস্তু আছে (বস্তুর নামটা লিখলাম না)।বস্তুটি দিতে হবে দুজনের যে কোনো একজনকে। তন্মধ্যে একজন আপনার মা এবং অন্যজন আপনার সদ্য-বিবাহিতা স্ত্রী। প্রশ্ন হচ্ছে বস্তুটি আপনি দুজনের মধ্যে কার হতে তুলে দেবেন? সময় ছিল মাত্র দুই সেকেন্ড।

শিক্ষার্থীরা জবাব লিখে শিক্ষকের হাতে ‍তুলে দিলেন।তিনি কাগজগুলো পড়ে বললেন : যারা বস্তুটি মায়ের হাতে তুলে দেবেন, তারা বাস্তবতা বিবর্জিত, অতিমাত্রায় আবেগপ্রবণ, পশ্চাৎপদ, অদূরদর্শী, বোকা, স্বার্থপর, অপরিনামদর্শী, মায়ের অকল্যাণকামী, সর্বোপরি নিজের, পরিবারের ও সমাজের সঙ্গে সুন্দর সেতুবন্ধনে বিচক্ষণ নয়।যারা মা-কে প্রকৃত অর্থে ভালবাসেন তারা কখনও বস্তুটি মায়ের হাতে তুলে দেবেন না।

কয়েকজন প্রশ্ন করলেন : কেন?শিক্ষক : দেখ, বস্তুটা তোমার মাকে দিলে তিনি খুশি হবেন কিন্তু বউকে দিলে খুব খুশি হবেন। বউ ভাববেন, নিজের জন্মধাত্রীকে না-দিয়ে আমাকে দিয়েছে। আমার স্বামী আমাকে খুব ভালবাসেন। মা ভাববেন, আমার ছেলে, দশমাস পেটে রেখেছি, লালন করেছি; আমাকে না দিয়ে কী বউকে দেবে? বউকে দিলে তোমার মা কষ্ট পাবেন সত্য, কিন্তু তোমার সংসার করতে হবে বউয়ের সঙ্গে, মায়ের সঙ্গে নয়। তোমার মাকে অধিকাংশ সময় পুত্রবধূর সঙ্গে কাটাতে হবে। তুমি যদি বস্তুটা তোমার বউকে দাও সে খুশিতে আপ্লুত হয়ে ওঠবে। খুশিতে আপ্লুত বউ বস্তুটা তোমার মায়ের হাতে তুলে দিয়ে বলতে পারে : মা, আপনার ছেলের উপহার, আপনি রাখুন। আর যদি মাকে দাও, বউ খুব কষ্ট পাবে। ওই কষ্ট তাকে ঈর্ষাপরায়ণ ও হিংস্র করে তুলতে পারে। ভাববে, না-জানি কী মূল্যবান বস্তু এখানে রয়েছে। এটা আমাকে পেতে হবে। স্বামী আমায় ভালবাসে না। মজা দেখাব। তোমার অবর্তমানে তোমার বউ শাশুড়ীকে মানসিক অশান্তিতে জর্জরিত করে তুলতে পারে। অধিকন্তু তুমি মা-কে বস্তুটা দিলেও তোমার মা রাখতে পারবে না। বউ ওই বস্তুটা তোমার মায়ের নিকট হতে জোর করে বা কৌশলে নিয়ে নেবে। সারা জীবন, এমনকি মায়ের অবর্তমানেও তোমাকে খোচা দেবে।